সামনেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, কী খেলে ছেলেমেয়েরা সুস্থ ও সতেজ থাকবে, তার কিছু পরামর্শ (brain food for exams)

দোরগোড়ায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, রয়েছে জয়েন্ট এন্ট্রান্স। এই পরীক্ষার মরসুমে পরীক্ষার্থীদের দরকার সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য ও শরীর চর্চা। মানসিক চাপের মধ্যে থাকা মস্তিষ্কের ক্লান্ত ও অবসন্ন কোষগুলিকে সতেজ ও তরতাজা রাখতে রইল খাবার-দাবারের দীর্ঘ তালিকা।

পরীক্ষার সময় কী ধরনের খাবার খাওয়া দরকার

জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে অভিভাবকদেরও চাপ থাকে। অভিভাবকদের উদ্বেগের ঠেলায় পড়ুয়াদের উপর ‘এটা খেয়ো না, ওটা খাও’ এমন তীক্ষ্ণ নজরদারি শুরু হয়ে যায়। পরীক্ষার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে তা অবশ্যই চিন্তার। তাই পড়ুয়াদের সঙ্গে অভিভাবকদের জন্যও থাকল তাঁদের ছেলেমেয়েদের জন্য brain food for exams |

প্রথমত, কীভাবে খাবার খেতে হবে, তার উপর নজর দেওয়া জরুরি। একবারে বেশি করে না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খাবার খাওয়া জরুরি। এর ফলে ব্রেনে এনার্জি পৌঁছবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর। আর একসঙ্গে অনেকটা খাবার খেয়ে নিলে পেটে চাপ পড়বে, বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করবে।
ব্রেকফাস্টে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাটের সামঞ্জস্য থাকা প্রয়োজন। অনেকেই রাত জেগে পড়াশোনা করে। ডিনারের পর দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকতে হয়। তাই দিনের শুরুতে এমন খাবার খেতে হবে, যাতে যথাযথ পুষ্টি মেলে।

পড়ার চাপে দ্রুত এনার্জি ক্ষয় হয়, ঘন ঘন খিদে পায়। তাই খিদে এবং মানসিক উদ্দীপনা যোগাতে ছোট ছোট স্ন্যাকস খেতে হবে। শুধু খাবারের দিকেই নয়, জলপানের দিকটাও বিশেষ নজরে রাখতে হবে। এই সময় শারীরিক পরিশ্রম হয় না বলে তেষ্টা হয়ত সেভাবে পায় না। কিন্তু সঠিক জলের চাহিদা পূরণের জন্য দিনে দু’ লিটার জলপান করতেই হবে। সেই সঙ্গে ফলের রস, স্যুপও খাওয়া যেতে পারে। এতে পুষ্টি ও শরীরে জলের যোগান দুটোই ঠিক থাকবে।

 

কী কী খাওয়া দরকার

brain food for exams

 

যে কোনও মরসুমি ফল, সব্জি, অঙ্কুরিত ছোলা, ডাল, সবজি যেন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকে। প্রোটিনের জন্য মাছ ও ডিম রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়। তা ছাড়া মুরগির মাংসও সপ্তাহে দু’ একবার খেতে পারে পরীক্ষার্থীরা।

ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড মেলে এমন খাবার তালিকায় রাখলে ভালো হয়। সে ক্ষেত্রে রুটিতে ডাল এবং স্যুপ মিশিয়ে খাওয়া যাতে পারে। অবশ্য সবাই যে একই রকমের খাবার খাবে এমনটাও নয়। পরিমাণের দিক থেকেও তারতম্য হতে পারে। মোটামুটি সকালে দু’ তিনটে আটার রুটি সব্জি সহযোগে খেতে পারে পরীক্ষার্থীরা। সঙ্গে ডিম বা এক গ্লাস দুধ। ঘণ্টাখানেক পর দই বা ফলের রস খাওয়া যেতে পারে। দুপুরের খাবারে ভাত, ডাল, বেশি করে সব্জি, মাছ আর স্যালাড রাখতে হবে।

 

বিকেলের টিফিনে –

brain food for exams

 

বাদাম, স্যুপ, টোস্ট যা খুশি চলতে পারে। ঘণ্টাখানেক পর ঘোল বা দই খাওয়া যেতে পারে। ডিনারেও আটার রুটি, সব্জি, ইচ্ছে অনুযায়ী মাছ কিংবা অল্প মাংস বা সয়াবিন খেতে দিতে পারেন পরীক্ষার্থীকে। রাত জেগে যারা পড়াশোনা করে, হেলথ ডিংকস দেওয়াটা বাধ্যতামূলক।

 

কী খাবে না

brain food for exams

 

রাত জেগে পড়া কিংবা একটানা পড়তে হলে অনেকে চা ও কফি খায় বারবার। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন,চা,কফি থেকে দূরে থাকাই ভালো। কফির ক্যাফাইন স্নায়ুর উদ্দীপনা বাড়ায়। ফলে মনঃসংযোগের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এই সময় ভাজাভুজি, জাঙ্ক ফুড একেবারেই খাওয়া চলবে না বলে পরামর্শ চিকিৎসকদের। চর্বি জাতীয় খাবার যা সহজে হজম হয় না, এ সব খাবার থেকে পরীক্ষার্থীদের দূরে থাকাই ভালো।
পরীক্ষার সময় পেট ভালো রাখাটা ভীষণ জরুরি। সেই দিকটায় অভিভাবকদের বিশেষ নজর দিতে হবে। চাইলেই ভাজাভুজি বা জাঙ্ক ফুড দেবেন না ছেলেমেয়েদের।

 

পরীক্ষার সময় পুষ্টিকর স্ন্যাক্স (brain food for exams)

brain food for exams

 

কাজু বাদাম, ফল, ভুট্টা প্রভৃতি খাবার স্ন্যাক্স হিসেবে খুবই ভালো। ডাবের জল, আখের রস, বিটনুন ও পাতিলেবু দিয়ে সরবত খুবই উপযোগী এই সময়। নজর রাখতে হবে শরীর যেন শুষ্ক না হয়ে যায়। একে মার্চের প্রথম থেকেই হঠাৎ গরম পড়ে যায়, তাই শরীরে জলের চাহিদার দিকে নজর রাখা খুব প্রয়োজন। মস্তিষ্কের ৯০ শতাংশ যে জলে পরিপূর্ণ থাকে সেটা ভুললে চলবে না।

 

স্ট্রেস রিলিফ

পরীক্ষার মানসিক চাপ যেন ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটায়। অন্তত ৬ ঘণ্টা ভালোভাবে ঘুম দরকার। সেই সঙ্গে একটানা পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে একটু গান শোনা, হালকা ব্যায়াম, দৌড়ে আসা পরীক্ষার দোরগোড়ায় পড়াশোনায় মনসংযোগ বাড়াতে সাহায্যই করবে। স্কিপিং করতে পারে কিছুক্ষণ। আর পরীক্ষার সময় কপালে দইর ফোঁটার চেয়ে দইয়ের লস্যি খেয়ে পরীক্ষা দিতে বসাটা বেশি ভালো।

Comments are closed.