সিএএ’র বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ফের মামলা, নাগরিকত্ব আইন মানুষকে বোঝাতে ব্যাপক কর্মসূচির পথে বিজেপি

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ বাতিলের দাবিতে নতুন আবেদন জানানো হল সুপ্রিমকোর্টে। অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রটেকশন অফ সিভিল রাইটস বা এপিসিআর-এর তরফে এই নয়া আবেদন জানানো হয়েছে। নতুন এই আবেদনে এই আইনকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের পাশাপাশি এই সংশোধিত আইনের ১৯৫৫ সালের মূল আইনের ৩(১) ধারাকেও স্বৈরাচারী বলে দাবি করা হয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি স্থগিতের আবেদন করা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। আবেদনকারীদের তরফে বলা হয়েছে, যেভাবে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে, তা সংবিধানের পরিপন্থী।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভারতের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হলেও, ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী দেশকে সেই তালিকা থেকে কেন বাদ রাখা হয়েছে? প্রতিবেশী দেশগুলির ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের আশ্রয়দানের কথা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে বলা হলেও এই তিন দেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যে অত্যাচারিত গোষ্ঠী রয়েছে, তাঁদের কথা কেন বাদ রাখা হয়েছে, প্রশ্ন তোলা হয়েছে তা নিয়েও। কী করে বোঝা যাবে, কোন মানুষ অত্যাচারের শিকার হয়ে প্রতিবেশী এই তিন দেশ থেকে ভারতে এসেছেন সে প্রশ্ন এই আবেদনে করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত নির্দিষ্ট মাপকাঠি কেন বলা নেই সিএএতে তোলা হয়েছে সে প্রশ্নও।
এছাড়াও এপিসিআর-এর এই আবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৫৫ সালের মূল নাগরিকত্ব আইনের ৩(১) ধারাটিও অসাংবিধানিক। এই ধারায় জন্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া কথা বলা হয়েছে এবং সেই সংক্রান্ত তিনটি মাপকাঠির কথা বলা হয়েছে। যেখানে প্রথম মাপকাঠিতে বলা হয়েছে, ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই এর মধ্যে যাঁরা ভারতে জন্মাবেন, তাঁরা সকলেই ভারতের নাগরিক। দ্বিতীয় মাপকাঠিতে করা হয়েছে, ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই এর পর থেকে ২০০৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা এদেশে জন্মেছেন তাঁরাও ভারতের নাগরিক। আর তৃতীয় মাপকাঠিতে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালের ৩০ ডিসেম্বরের পর যাঁরা ভারতের জন্মেছেন তাঁরা সকলেই ভারতের নাগরিক। আবেদনের প্রশ্ন তোলা হয়েছে, প্রথমটিতে সমস্যার কিছু না থাকলেও, দ্বিতীয় ও তৃতীয় নিয়মে বেশ কিছু মাপকাঠি রয়েছে যার ফলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে বহু মানুষকে। এই গোটা নিয়মকে বিভেদমূলক বলে আবেদনে দাবি করেছেন আবেদনকারীরা।

 

Comments are closed.