গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার বিএসএফ কমান্ডান্ট, ১০০ কোটির অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ

বাংলায় গরু পাচার কাণ্ডে প্রথম গ্রেফতারি। প্রায় সাত ঘণ্টা জেরার পর মঙ্গলবার বিএসএফ-এর এক কমান্ডান্টকে পাকড়াও করল সিবিআই। নাম সতীশ কুমার। সিবিআই সূত্রে খবর, গরু পাচার কাণ্ডে অন্যতম সন্দেহভাজন এনামুল হকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল সতীশ কুমারের। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকার লেনদেনেরও হদিশ মিলেছে বলে খবর। এদিকে এনামুলকে করোনার কারণে হোম আইসোলেশন করে নজরবন্দি রেখেছে সিবিআই।

গত সেপ্টেম্বরে কেরলের বাসিন্দা এবং বিএসএফ কমান্ডান্ট জিবু ডি ম্যাথিউয়ের সঙ্গতিহীন আয়ের উৎস খুঁজতে গিয়ে বাংলায় গরু পাচার-চক্রের খোঁজ পায় সিবিআই। সেই সূত্র ধরে কলকাতায় গরু পাচার নিয়ে আলাদা একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাতেই বিএসএফ, কাস্টমস সহ বিভিন্ন দফতরের একাধিক সরকারি আধিকারিকের নাম উঠে আসে। জানা যায়, মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল হক ও তার সিন্ডিকেট চক্রকে গরু পাচারে সহায়তা করতেন এই আধিকারিকরা। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হলে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে এফআইআর-এ সতীশের নাম উঠে আসে। সতীশ কুমারের বিপুল বেনামি সম্পত্তিরও হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। কলকাতা ছাড়াও ঝাড়খণ্ড ও দিল্লিতে বেনামে ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। সিবিআই সূত্রে খবর, বর্তমানে ছত্তিসগঢ়ের রায়পুরে কর্মরত সতীশ কুমার। তবে ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে বিএসএফ-এর কমান্ড্যান্ট ছিলেন তিনি। অভিযোগ, তাঁর ছত্রছায়াতে সীমান্তে বাজেয়াপ্ত হওয়া গরুকে বাছুর বলে দেখিয়ে কম দামে তা তুলে দেওয়া হত এনামুল হকের হাতে। তার পর সেই গরু ফের পাচার হয়ে যেত বাংলাদেশে। এজন্য বিপুল কাটমানি আদায় করতেন সতীশ কুমার। বাদ পড়তেন না শুল্ক দফতরের কিছু আধিকারিকও।

মঙ্গলবার সকালে নিজাম প্যালেসে বিএসএফ কমান্ডান্টকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন সিবিআই আধিকারিকরা। দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর পর্বে সতীশ কুমার একাধিক প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ তদন্তকারীদের। তদন্তে অসহযোগিতার জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

Comments are closed.