ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমির প্রথম মহিলা সভাপতি হলেন চন্দ্রিমা সাহা, ছিলেন বাংলা ক্রিকেট দলের প্রাক্তন সহ-অধিনায়কও

বাংলা মহিলা ক্রিকেট দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। রেডিওতে চুটিয়ে ক্রিকেট কমেন্ট্রিও করেছেন। পাশাপাশি চালিয়ে গিয়েছেন বিজ্ঞানের সাধনা। এবার ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমির (আইএনএসএ) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন চন্দ্রিমা সাহা। আইএনএসএ-এর ৮৫ বছরে ইতিহাসে এই প্রথম সংস্থার সর্বোচ্চ পদে বসতে চলেছেন একজন মহিলা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করার পর, ১৯৮০ সালে ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অফ কেমিকেল বায়োলজি থেকে পিএইচডি করেন চন্দ্রিমা সাহা। তারপর ইউনিভার্সিটি অফ কানসাস মেডিকেল সেন্টার থেকে পোস্ট ডক্টরাল। চন্দ্রিমা সাহা দেশের বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে প্রথম সারির নাম। আইএনএসএ-র সর্বোচ্চ পদে আসীন হওয়ার আগে তিনি ছিলেন এই সংস্থারই ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে, পাশাপাশি সামলেছেন দিল্লিতে ন্যাশনাল ইন্সস্টিটিউট অফ ইমিউনোলজির ডিরেক্টরের ভারও।
২০২০ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন চন্দ্রিমা সাহা। তাঁর উদ্দেশ্য, সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানকে আরও ছড়িয়ে দেওয়া। কুসংস্কার এবং জনমানসে বিজ্ঞান সম্পর্কে ভুল ধারণা ভাঙতে বিজ্ঞানকে আরও জনমুখী করতে তুলতে, দীর্ঘদিন কাজ করে চলেছেন চন্দ্রিমা সাহা। এবার তাঁর লক্ষ্য, ছদ্ম বিজ্ঞানের মোকাবিলা করে সাধারণ মানুষকে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উৎসাহ দেওয়া। আর এই কাজে সকলের সহায়তা চাইছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বায়োলজিস্ট। তিনি বলছেন, ক্রিকেট খেলা আমাকে শিখিয়েছে, টিম ওয়ার্কের কী মূল্য। তবে দৈনন্দিন ব্যস্ততায় এখন আর ক্রিকেট চর্চা হয়ে ওঠে না। তবে হাতে সময় পেলেই টিভিতে ক্রিকেট দেখতে বসে যান আইএনএসএ-র প্রথম মহিলা সভাপতি। শখ ছিল ফটোগ্রাফিরও। কিন্তু এখন আর সময় পান না। চন্দ্রিমা সাহার মতে, বিজ্ঞানের গবেষকরা কী কাজ করছেন, তা সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। পাশাপাশি স্থানীয় ভাষার ব্যবহার আরও বাড়ানোর দিকেও নজর রয়েছে তাঁর। মানুষকে বোঝাতে হবে আর বোঝানোর সবচেয়ে সেরা মাধ্যম স্থানীয় ভাষার আরও বহুল ব্যবহার, বলছেন বছর ৬৬ র চন্দ্রিমা সাহা।
ভারতে বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে যে সংস্থাগুলি অগ্রগণ্য, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমি তার মধ্যে একেবারে প্রথম সারির। কিন্তু দেশে বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে মহিলারা কি পিছিয়ে পড়ছেন? এই ধরনের সংস্থায় মহিলাদের সংখ্যা বাড়াতে কি সংরক্ষণ প্রয়োজন? বাংলা মহিলা ক্রিকেট দলের প্রাক্তন সহ-অধিনায়ক অবশ্য তা মানতে রাজি নন। পাশাপাশি বিরোধিতা করছেন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণেরও। তাঁর দাবি, এই সংস্থায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা হলে মানের সঙ্গে আপোশ করতে হবে। কিন্তু দেশে উঁচু মানের মহিলা গবেষকের অভাব নেই। প্রয়োজন শুধু তাঁদের সঠিক পথ নির্দেশের। তাহলেই দেশের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞান সংস্থাগুলোয় পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দেবে মহিলারাও। বলছেন দেশের প্রথম মহিলা আইএনএসএ সভাপতি।

Comments are closed.