রাজ্যে প্রথম করোনা আক্রান্তের মৃত্যু ঘিরে চূড়ান্ত সতর্কতা, মৃতের সংস্পর্শে কতজন এসেছেন, চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে

রাজ্য তথা কলকাতায় প্রথম করোনা আক্রান্তের মৃত্যু ঘিরে জারি হল কড়া সতর্কতা। সরকারি সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে প্রায় ৪০০ র বেশি মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন ফেয়ারলি প্লেসে কর্মরত ওই প্রৌঢ়। সেই তালিকায় রয়েছেন তাঁর অফিসের সহকর্মী থেকে ট্রেনের সহযাত্রী, পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুরু করে একাধিক চিকিৎসক।
গত ১৬ মার্চ সর্দি ও জ্বর নিয়ে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন দমদম এলাকায় বছর ৫৭-র ওই প্রৌঢ়। সে সময় তাঁর করোনাভাইরাস ধরা পড়েনি। তাঁর বাড়ির লোকজনকেও বাঙুর হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রাখা হলেও, গত কয়েকদিনে কারা প্রৌঢ়ের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। আইসিইউতে তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে বলে খবর।

কলকাতায় প্রথম দুই করোনা আক্রান্তের মতো প্রৌঢ়ের কোনও বিদেশ যাত্রার রেকর্ড না পাওয়া গেলেও, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সস্ত্রীক তিনি বিলাসপুর যান। যাওয়ার পথে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস ধরেছিলেন। কলকাতায় ফেরেন পুণে-হাওড়া আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেসে। সেই সময় কারা তাঁর সহযাত্রী ছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তাঁদের কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে খবর। তা ছাড়া পেশায় রেলকর্মী ওই প্রৌঢ় কলকাতায় ফেরার পর গত ৩ মার্চ থেকে ৭ মার্চ অফিস করেন। সে সময় যে সহকর্মীরা তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও আর কারা তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন, সে খোঁজও শুরু করা হয়েছে। গত ৯ মার্চ হোলি খেলার পরের দিন থেকেই অসুস্থ ছিলেন প্রৌঢ়। সে সময় একাধিক চিকিৎসকের কাছে গিয়েছেন। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই গত ১৬ তারিখ সর্দি ও জ্বর নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। ১৯ মার্চ তাঁর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা নজরে আসে চিকিৎসকদের। তারপর নাইসেড ও এসএসকেএম-এ প্রৌঢ়ের রক্ত ও লালারসের নমুনা পাঠানো হলে একটি রিপোর্টে কোভিড-১৯ ধরা পড়ে। ২১ মার্চ ফের আর একটি পরীক্ষা করা হয়। সেখানেও তাঁর করোনা পজিটিভ বলে জানা যায়। সোমবার প্রৌঢ়ের মৃত্যুর পর করোনা আতঙ্ক আরও তীব্র হল কলকাতায়।
প্রৌঢ়ের পুত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি সপরিবার বা একা কলকাতায় এসেছিলেন কি না, তাও দেখা হচ্ছে।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মৃতদেহ পরিবারের হাতে দেওয়া হবে না, তাতে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তবে ডিজপোজাল নিয়ম মেনে হবে। এখন কারা করোনা আক্রান্ত রাজ্যের প্রথম মৃতের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা নিয়েই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে সর্বদল বৈঠকে ওই মৃত্যুর কথা জানিয়ে বলেন, পরিবারের এক ছেলে ইতালিতে থাকে

Comments are closed.