Coronavirus: ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী, ২০০ কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা, বাচ্চাদের বাড়িতে পৌঁছানো হবে খাবার

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আরও কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসাররা ওই বৈঠকে ছিলেন। বৈঠক শেষে মমতা জানান, সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হল। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, আইসিডিএস কেন্দ্র সব বন্ধ থাকবে। শিক্ষকেরা বাড়ি থেকে কাজ করবেন।
আইসিডিএস কেন্দ্রগুলি থেকে বাচ্চাদের খাওয়ার জন্য চাল-ডাল তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে সমাবেশ, ভোগ বিতরণ ইত্যাদি এড়ানোর আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। ১৮ তারিখ বোলপুরে তাঁর প্রশাসনিক বৈঠকও বাতিল করা হয়েছে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত অডিটোরিয়াম, স্টেডিয়াম, সিনেমা হল বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেওয়া হল এদিন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এখনও রাজ্যে একজনেরও দেহে করোনাভাইরাস মেলেনি। কিন্তু আত্মতুষ্টির কোনও অবকাশ নেই। অনেকে আইসোলেশনে থাকতে চাইছে না। কেউ কেউ হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে এপিডেমিক ডিজিজেস অ্যাক্ট (মহামারি আইন) লাগু করা হল। তবে এর অপপ্রয়োগ করা হবে না। এদিনই
বনমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জি জানান, ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের ১২ টি চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রাজ্যে ২০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন, এমন ১০ লক্ষ মানুষের জন্য মাথাপিছু ৫ লক্ষ টাকা বিমা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের মানুষের কাছে তাঁর আবেদন, জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের সমস্য হলে লজ্জা বা ভয়ে লুকিয়ে রাখবেন না। অসুখ যে কারও হতে পারে। তিনি বলেন, আমিও তো আক্রান্ত হতে পারি। এই মারণ ভাইরাসের ওষুধ বেরোয়নি বলে সতর্কতাই শেষ কথা। বারবার হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার রাখা, যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলা, বেশি করে জলপান করতে সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালের কাছে তাঁর আবেদন, চিকিৎসা করতে এলে মানুষকে দয়া করে ফিরিয়ে দেবেন না। নিজেদের রক্ষার জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরুন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিন। যদি রোগীর দেহে করোনা রয়েছে বলে সন্দেহ করেন তাহলে সরকারি হাসপাতালে বদলি করুন। নাইসেড, এসএসকেএমে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।
অফিসে ঢোকার আগে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী কিছুদিন মেলা, বড় জমায়েত করতে বারণ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই মুহূর্তে অন্যান্য রাজ্যের মতো ১৪৪ ধারা জারি করার প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন না। মানুষ এই সাবধানতা মানবেন এবং কোনও অঘটন হবে না বলেই তাঁর বিশ্বাস।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, তথ্যে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, প্রথম সপ্তাহে যেখানে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র তিনজন, সেটাই তৃতীয় সপ্তাহে এসে দাঁড়িয়েছে ১০৫ এ। যে অসুখের প্রতিষেধক পাওয়া যায়নি, সতর্কতার মাধ্যমে তার মোকাবিলা করা দরকার।

Comments are closed.