দেশজুড়ে কৃষক অসন্তোষ যে তীব্র আকার ধারণ করেছে। কিছুদিন আগে, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বারাণসী কেন্দ্রে তামিলনাড়ুর ১১১ জন কৃষক একসঙ্গে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তাঁদের অসন্তোষ প্রকাশ করে।
একইভাবে এবার তেলেঙ্গানার নিজামাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের কন্যা কে কবিতার বিরুদ্ধে দু’শোরও বেশি কৃষক মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন। এভাবেই রাজ্যের শাসক দল, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস)-র বিরুদ্ধে তাঁদের ক্ষোভ জানালেন কৃষকেরা।
কয়েক মাস আগেই বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে তেলেঙ্গানায়। বিপুল জনসমর্থনের মধ্যে দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রেখেছে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএস। সেই বিপুল জয়ের কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছিল কেসিআরের কৃষি নীতিকে। কিন্তু তেলেঙ্গানায় কৃষকরা যে আদৌ খুশি নন, তার প্রমাণ মিলল মুখ্যমন্ত্রী-কন্যার বিরুদ্ধে কৃষকদের দলবেঁধে ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে।
হলুদ ও লাল জোয়ারের চাষ করা এই কৃষকদের অভিযোগ, ১৫ বছর আগে প্রতি কুইন্টাল হলুদের দাম ছিল ১৫ হাজার টাকা, আর কেসিআরের শাসনে বর্তমানে এর দাম এসে দাঁড়িয়েছে কুইন্টাল প্রতি ৬ হাজার টাকায়! না টিআরএস, না কংগ্রেস-বিজেপি, কৃষকরা জানিয়েছেন, শেষ চারবছর ধরে তাঁদের দুরাবস্থার কথা কেউ কানে তোলেনি। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য, ফসলের ন্যায্য দাম, হলুদ বিপণনের জন্য বিশেষ বোর্ড গঠন সহ বেশ কয়েকটি দাবি পূরণে এবার ভোটে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা।
রায়তু ঐক্য বেদীকা নামে কৃষক সংগঠনের সভাপতি তিরুপতি রেড্ডির কথায়, দিনের পর দিন বিভিন্নভাবে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্ঠা করেও, সুরাহা হয়নি।
আর এক কৃষক নেতা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি পূরণে তাঁরা বদ্ধপরিকর। একটি ‘হোয়াটস অ্যাপ’ গ্রুপে রাজ্যের প্রত্যেক কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান ওই নেতা।
তবে শুধুমাত্র টিআরএস সরকার নয়, বিজেপি বা কংগ্রেস কাউকেই তাঁরা সমর্থন করছেন না বলে জানান আর এক কৃষক নেতা। তিনি বলেন, এঁরা কেউই কৃষকের সমস্যার কথা ভাবেন না। তাই ভোটে জিতে নিজেদের সমস্যার সুরাহা নিজেরাই করবেন বলে জানান ওই কৃষক নেতা।
এদিকে, একসঙ্গে এত জনকে কীভাবে ইভিএমে স্থান দেওয়া হবে তা নিয়ে ফাঁপরে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। বাধ্য হয়ে তাহলে কি ব্যালট ফিরিয়ে আনতে হবে? ভাবছে কমিশন।