Farmers Protest: সরকারের জল স্পর্শ করলেন না নেতারা! বিরতিতে খেলেন লঙ্গরের ডাল-রুটি

সদ্য তৈরি হওয়া ৩ টি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অনড় রাজধানী দিল্লি স্তব্ধ করে দিয়েছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠক শেষে কৃষক নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, সরকারের কাছে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে ৩ টি কৃষি আইন বাতিল করার এটাই শেষ সুযোগ। 

শনিবার সরকারের সঙ্গে আবার বসবেন তাঁরা। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর জানিয়েছেন, সরকারের কোনও ইগো নেই। খোলা মনে কথা এগোচ্ছে।  

অন্যদিকে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়িয়ে পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সদ্য বিচ্ছিন্ন জোট শরিক অকালি দলের প্রকাশ সিংহ বাদল কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে পদ্ম বিভূষণ ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কৃষকদের সমর্থন জানিয়ে পথে নামছেন। বিশেষ অধিবেশনের দাবি জানিয়ে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরি চিঠি দিয়েছেন। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমেই আরও জটিল হচ্ছে। 

গোটা দিনে দাগ কাটার মতো ঘটনা একাধিক। তার মধ্যে নিঃসন্দেহে অন্যতম, এই ছবিটি। দেখা যাচ্ছে, ধোপদুরস্ত বিজ্ঞান ভবনের ঝাঁ চকচকে মেঝেতে বসে ডাল-রোটি খাচ্ছেন দুই সর্দারজি। তাঁরা সরকারের সঙ্গে মিটিংয়ে যোগ দেওয়া কৃষক নেতা। আবার বাগানে বসে এমন দু একজনকে দুপুরের খাবার খেতে দেখা যায়। 

সমস্যা মেটাতে সরকারের সঙ্গে বৈঠকের বিরতিতে সরকারি আতিথেয়তায় জল পর্যন্ত গ্রহণ করেননি কৃষক নেতারা। তাই বিজ্ঞান ভবনের কাছে একটি গুরুদ্বারের লঙ্গর থেকে ডাল আর রুটি পোটলা বেঁধেই বৈঠকে ঢুকেছিলেন। চায়ের বিরতিতে বাইরে অপেক্ষমান সাথীরা পাঠিয়েছেন। তাতেই চুমুক দিয়েছেন কৃষক নেতারা। সরকারি খাবার খেলেন না কেন? 

বৈঠকে যোগ দেওয়া এক কৃষক নেতা বললেন, বাইরে আমাদের সাথিরা তাঁদের জীবন মরণের সমস্যার সমাধান করতে আমাদের পাঠিয়েছে। আর এখানে এসে আমরা সরকারি ভালমন্দ খাবার খাবো! এটা সম্ভব না। সরকার ঘোষণা করুক ওই ৩টি কৃষক বিরোধী আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া আর কোনও দাবি নেই। 

আলোচনা এখনও জারি। শনিবার ফের বৈঠক। শেষ দু-তিনদিন কেন্দ্রের তরফে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে, সরকার এমএসপির ব্যাপারে লিখিত দিতে রাজি। কিন্তু কৃষকরা ৩ টি আইন বাতিলের দাবিতে অনড়। কী অপেক্ষা করছে? গত ক’দিন ধরে স্থলপথে রাজধানী দিল্লিকে কার্যত অবরুদ্ধ করে দিয়েছেন হাজার হাজার কৃষক। কিন্তু আমজনতাকে যাতে সমস্যায় পড়তে না হয়, সে জন্য চেষ্টার কসুর করছেন না পাঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে আসা কৃষকরা। কৃষক নেতারা বারবার জানাচ্ছেন, তাঁরা ৬ মাসের রসদ নিয়ে এসেছেন। সেই ভাঁড়ার থেকে আশেপাশের বস্তিতে খাবার চলে যাচ্ছে। বাচ্চারা দুধ পাচ্ছে। সবটাই হচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। 

মহারাষ্ট্রে কৃষকদের লং মার্চের সময় দেখা গিয়েছিল, মুম্বইয়ের একটি অংশে পরদিন বাচ্চাদের পরীক্ষা আছে বলে হাজার হাজার কৃষক রাতের বেলা বেরিয়ে পড়েছিলেন। একদম নিঃশব্দে। যাতে কারও পড়ায় ব্যাঘাত না হয়। পরদিন সকালে মিছিলের কারণে যেন পরীক্ষার্থীদের দেরি না হয়ে যায়। এবার আবার দিল্লিতে পথে নেমেছেন সেই কৃষকরা। কিন্তু সরকার আইন বাতিলের দাবি মানবে কি? এখনও পর্যন্ত তার কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। সব চোখ এখন শনিবারের দিকে।

Comments are closed.