আমেরিকা থেকে আফ্রিকা কিংবা অ্যামাজন, ১৯৮২ থেকে নয়টি বিশ্বকাপের সাক্ষী চট্টোপাধ্যায় দম্পতি

বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য দীর্ঘ চার বছর অপেক্ষা করে থাকেন অসংখ্য মানুষ। কেউ অন্তত জীবনে একবার বিদেশে গিয়ে বিশ্বকাপ উত্তাপের আঁচ পেতে চান, আবার কেউ টেলিভিশনের সামনে বসে সেই আবেগময় উত্তেজনায় অংশ নেন। কিন্তু কলকাতায় এমনও ফুটবলপ্রেমী আছেন, যাঁরা গত প্রায় তিন যুগ ধরে যেখানেই বিশ্বকাপের আসর বসেছে সেখানেই স্বশরীরে হাজির থেকেছেন।
এঁরা কলকাতার চট্টোপাধ্যায় দম্পতি। খিদিরপুর এলাকার বাসিন্দা, ৮০ পেরোনো পান্নালালা চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী চৈতালীদেবী সেই ১৯৮২ সালের স্পেন বিশ্বকাপ থেকে ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ নিয়ে মোট নয়টি বিশ্বকাপ দেখে এসেছেন। ব্যতিক্রম নয় এবারও। আসন্ন বিশ্বকাপেও রাশিয়ার মাঠে টেলস্টার বল নিয়ে যে যুদ্ধ হবে তার সাক্ষী থাকতে ইতিমধ্যেই এই দম্পতি নিয়ে ফেলেছেন রুশ সফরের প্রস্তুতি। ১৯৮২ সালে স্পেন বিশ্বকাপ দিয়ে শুরু হয় প্রথম যাত্রা। কখনও স্পেন থেকে আমেরিকা, কখনও জাপান থেকে জার্মান, আবার কখনও দঃআফ্রিকা থেকে অ্যামাজন নদের তীরে ব্রাজিল। ফুটবলের টানে সব দেশেই ছুটে গিয়েছেন এই দম্পতি। সময়ের সাথে সাথে বদলেছে বিশ্বকাপের ধরন, চাল-চলন সবই। কিন্তু এক থেকেছে চট্টোপাধ্যায় দম্পতির ফুটবলের প্রতি ভালবাসা ও ইচ্ছাশক্তি। তাই প্রতি বছরই পেনশন থেকে টাকা জমিয়ে জমিয়ে তুলে রাখেন বিশ্বকাপে যাওয়ার জন্য।
theBengalstory.com কে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে পান্নালাল বাবু জানান, ‘আমরা যখন ১৯৮২ সালে প্রথম স্পেন বিশ্বকাপ দেখতে যাই, তখনও ভাবিনি এরপর প্রতিবারই যেতে পারব। এখন এটা প্রায় অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। তিনি চান তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও মানুষ বেশি করে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে যাক।
এই সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতায় কোন দেশ সবচেয়ে ভাল লেগেছে জানতে চাওয়া হলে তিনি আতিথেয়তার দিক থেকে মেক্সিকোকেই এগিয়ে রেখেছেন। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ছিল মেক্সিকো। ১৪জুন মস্কোর উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তাঁরা। বিশ্বকাপ দেখে আগামী ২৮ জুন কলকাতায় ফিরবেন বলে পান্নালালবাবু জানিয়েছেন। ব্রাজিল সমর্থক পান্নালালবাবু জানান, অনেক সময় বিভিন্ন দেশে কিছু সমস্যার মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁদের। ১৯৯৪ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে পেলের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগও হয়েছিল এই দম্পতির।

Leave A Reply

Your email address will not be published.