এক মাসের দার্জিলিঙ সফরে গিয়ে ট্যুইট সেঞ্চুরির মুখে ধনখড়! ২৭ দিনে ৯৬ ট্যুইট

রাজ্য ও রাজ্যপাল দ্বন্দ্বের আবহে গোটা নভেম্বর মাসই দার্জিলিঙে থাকছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। দীর্ঘ এক মাসের এই উত্তরবঙ্গ সফরে একাধিক কর্মসূচি করেছেন, দেখা করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের সঙ্গে। আবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে একহাত নিয়েছেন। প্রায় একমাস দার্জিলিঙ থেকে রাজ্যপাল কী কী ইস্যুতে কতগুলো ট্যুইট করলেন রাজ্যপাল? ঠিক কী কারণে তীব্র হল রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের সংঘাত?

১ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত মোট ৯৬ টি ট্যুইট করেছেন রাজ্যপাল। যে ট্যুইটগুলির বেশিরভাগেই মমতার সরকারের প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন। ১ নভেম্বর দার্জিলিঙে পৌঁছেই ৯০ মিনিটের সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল। তা নিয়ে ট্যুইটও করেন। ২ নভেম্বর ট্যুইটে দার্জিলিঙের শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশকে নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে ট্যুইটেই জানান রাজ্যপাল। এর মধ্যে মুর্শিদাবাদ ও কোচবিহারেও সফর করেছেন রাজ্যপাল। একাধিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। কালিম্পং সহ পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে গিয়ে ৬ টি ট্যুইট করেছেন। সিকিমের রাজ্যপালের সঙ্গে সস্ত্রীক সাক্ষাত, সিকিমের মুখ্যসচিবের সঙ্গে তাঁর একান্ত আলাপচারিতার কথা ও ছবি ট্যুইটারে তুলে ধরেছেন। সৌমিত্র চ্যাটার্জির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ, দার্জিলিঙ রাজভবনে দীপাবলি উৎসব পালনের ছবি পোস্ট করেছেন। এর মধ্যে ৮ নভেম্বর গ্যাংটক রাজভবনে সিকিমের মুখ্যসচিবের আতিথেয়তায় মুগ্ধ ধনখড়ের কটাক্ষ ছিল মমতার সরকারের এগুলো শেখা উচিত! 

দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তের সঙ্গে স্থানীয় উন্নয়ন নিয়ে আলোচনায় বসেন। নিজে ট্যুইট করে জানান ধনখড়। দার্জিলিঙের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এর মধ্যে আবার বেশ কয়েকটি ট্যুইটে রাজ্য প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছেন না বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ১৭ নভেম্বর মুর্শিদাবাদে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে পুলিশি ঝামেলার কথা উল্লেখ করে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চান। মালদার সুজাপুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৯ নভেম্বর মমতা সরকারকে নিয়ে লম্বা ট্যুইট করেন। তারপর একাধিক ট্যুইটে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান একদিন দার্জিলিঙ রাজভবনে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন রাজ্যপালের সঙ্গে। সেই ছবি দিয়ে ট্যুইট করেন ধনখড়। মান্নান কলকাতা ফেরার পর তাঁর করোনা ধরা পড়ে। এখন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। 

পাহাড়বাসের সময়কালে সবচেয়ে বেশি যে বিষয় নিয়ে রাজ্যপাল ট্যুইট করেছেন তা হল কয়লা দুর্নীতি ও গরু পাচার কাণ্ড। এছাড়া বর্তমান এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) জ্ঞানবন্ত সিংহের বিরুদ্ধে পুরনো মামলার প্রসঙ্গ নিয়েও একের পর এক ট্যুইট করেছেন ধনখড়। শুক্রবার ট্যুইটে লিখেছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন জ্ঞানবন্ত। এদিকে তৃণমূলের আক্রমণের জবাবে তাঁর বার্তা, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেই আক্রমণ হয়।’ তাও জানিয়েছেন ট্যুইটেই।  

সবমিলিয়ে পাহাড় থেকে একের পর এক ট্যুইট-হানা অব্যাহত। 

Comments are closed.