‘বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্টের চেয়ে জীবন অনেক বড়’, কেমিস্ট্রিতে ২৪ পাওয়ার মার্কশিট শেয়ার করে বার্তা আইএএস অফিসারের

পরীক্ষা শেষে চলছে রেজাল্টের মরসুম। সিবিএসই থেকে রাজ্যের মাধ্যমিক, একে একে বেরোচ্ছে ফল। আর ইদানীং রেজাল্ট মানেই নম্বরের ছড়াছড়ি। কেউ সব বিষয়ে একশো পেয়ে প্রথম হয়েছে আবার কেউ এক নম্বরের ব্যবধানে দ্বিতীয়। সবমিলিয়ে নম্বরের যেন বান ডেকেছে। আর এখানেই উঠছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, নম্বরই কি সব? দশম কিংবা দ্বাদশে ঝুলি ভর্তি নম্বর পেলেই কি ভবিষ্যৎ ঝলমলে? যাঁরা ভালো নম্বর পাননি, কী করবেন তাঁরা?

সিবিএসইর দ্বাদশ শ্রেণির ফল বেরোনোর পর ট্যুইট করেছেন এক আইএএস অফিসার। যেখানে এই নম্বর নির্ভরতা নিয়ে ঘুরিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, উল্লেখ করেছেন ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। বর্তমানে আহমেদাবাদ স্মার্ট সিটির ডেপুটি মিউনিসিপ্যাল কমিশনার ও সিইও নীতিন সঙ্গওয়ান ট্যুইটে লিখেছেন, ২০০২ সালে বারো ক্লাসের পরীক্ষায় আমি কেমিস্ট্রিতে ২৪ পেয়েছিলাম। পাশ মার্কের চেয়ে মাত্র ১ নম্বর বেশি। কিন্তু তাতে আমার স্বপ্ন দেখায় কোনও ব্যাঘাত হয়নি। তারপর পড়ুয়াদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, নম্বরের ভারে ঝুঁকে যেও না। মনে রেখো, বোর্ড রেজাল্টই জীবন নয়। বরং নিজেকে আরও ভালো গড়ে তোলার সোপান হিসেবে ব্যবহার করো রেজাল্টকে। ট্যুইটের সঙ্গেই আইএএস অফিসার ট্যাগ করে দিয়েছেন কেমিস্ট্রিতে ২৪ পাওয়ার মার্কশিটটিও।

মাদ্রাজ আইআইটির প্রাক্তনী নীতিন সঙ্গওয়ানের বক্তব্য, কেমিস্ট্রিতে টেনেটুনে পাশ করেও তাঁর স্বপ্ন ছুঁতে সমস্যা হয়নি। তাই নম্বরের পিছনে না ছুটে নিজেকে গড়ে তোলার কাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বোর্ড পরীক্ষায় নম্বর বেশি কিংবা কমের সঙ্গে যার কোনও সম্পর্কই নেই।

নীতিন সঙ্গওয়ানের এই ট্যুইটটি শতাধিক রিট্যুইট হয়েছে। শেয়ার চলছে সর্বত্র। দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াও নীতিন সঙ্গওয়ানের ট্যুইট শেয়ার করে বলেছেন, বাড়ির ছেলে বা মেয়ের নম্বর দেখে পরিবারের হাসি কিংবা দুঃখের দিনে একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় বার্তা দিলেন আইএএস অফিসার নীতিন সঙ্গওয়ান।

এ বছরের সিবিএসইর দ্বাদশ শ্রেণির ফলে দেখা যাচ্ছে, ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ৩৮ হাজার পড়ুয়া। দেড় লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া পেয়েছে ৯০ শতাংশ কিংবা তার বেশি নম্বর। অর্থাৎ নম্বরের ছড়াছড়ি। কিন্তু দশম বা দ্বাদশের নম্বর জীবনের দৌড়ে সামান্য ব্যাপার মাত্র। পরীক্ষায় প্রচুর নম্বর যেমন ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারে না, তেমনই কম নম্বর পাওয়া মানেই জীবন শেষ, এমনটা মোটেও নয়। কেমিস্ট্রিতে পাশ মার্কের চেয়ে মাত্র ১ নম্বর বেশি পাওয়া বর্তমান আইএএস অফিসারের নিজের অভিজ্ঞতা সে কথাই বলে।

Comments are closed.