এখন ভোট হলে ৫০ আসন কমবে এনডিএ’র, বাড়বে তৃণমূল সহ অন্যরা! জনপ্রিয়তা অটুট মোদীর, সমীক্ষা ইন্ডিয়া টুডের

সিএএ-এনআরসি-এনপিআর নিয়ে উত্তাল দেশ। গণআন্দোলন সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মসনদে ফেরা মোদী-শাহের সরকার। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মোদী-শাহের জনসমর্থনেও কি আঘাত করেছে দেশব্যাপী এই গণআন্দোলনের জোয়ার? বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপ-কার্ভি ইনসাইটসের মুড অফ দ্য নেশন (MOTN) সার্ভেতে কিন্তু উঠে এসেছে তেমনই প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত। তবে দলীয় জনসমর্থনে ধাক্কা লাগলেও, নেতা হিসেবে মোদীর জনপ্রিয়তা অটুট। কী বলছে ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপ-কার্ভি ইনসাইটসের মুড অফ দ্য নেশন সমীক্ষা?

ওপিনিয়ন পোলে উঠে এসেছে, আজই লোকসভা ভোট হলে বিজেপি হারাতে পারে ৩২ টি আসন। ২০১৯ সালের মে মাসে ৩০৩ টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছিল মোদী সরকার। তার ৮ মাসের মধ্যেই জনসমর্থন কমার ইঙ্গিত স্পষ্ট। আজ ভোট হলে বিজেপি থেমে যেতে পারে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার একটি আসন কম অর্থাৎ ২৭১ টি আসনে। প্রাপ্ত ভোটের হার ৩৭ শতাংশ থেকে কমে ৩৬ শতাংশ হতে পারে। কংগ্রেস বাড়তি হিসেবে জিততে পারে ৮ টি আসন।

ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপ-কার্ভি ইনসাইটসের মুড অফ দ্য নেশন সমীক্ষা অনুযায়ী এনডিএর কমতে পারে ৫০ টি আসন। ৪ শতাংশ ক্ষয় হতে পারে প্রাপ্ত ভোটের হারে। এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার, এনডিএ জোটে এখন নেই শিবসেনা। এই অবস্থায় এনডিএ জোট পেতে পারে ৩০৩ টি আসন। অর্থাৎ সরকার গড়তে অসুবিধা নেই এনডিএর।

অন্যদিকে ইউপিএ জোটের বাড়তে পারে ১৫ টি আসন। তাদের ভোট প্রাপ্তির হার বাড়তে পারে ২ শতাংশ। তারা পেতে পারে ১০৯ টি আসন।

তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, এনডিএ বা বিজেপির ক্ষতি কিন্তু ইউপিএ বা কংগ্রেসের সরাসরি লাভ নয়। বরং সেই ডিভিডেন্ড ঢুকছে অন্যান্যদের খাতায়। ২০১৯ সালে ৯৭ টি আসন পেলেও, আজ ভোট হলে, তৃণমূল, সপা, বসপা, বাম, শিবসেনা, আপ, পিডিপিরা সম্মিলিতভাবে ১৩২ টি আসন পেয়ে যেতে পারে। ভোট শেয়ার ২৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হতে পারে ৩০ শতাংশ। ২ শতাংশ ভোট বৃদ্ধি অন্যান্যদের খাতায় এনে দিতে পারে ৩৫ টি আসন।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজও মোদীকেই বেশিরভাগ মানুষের পছন্দ। ৩৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন দেশের সেরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দ্বিতীয় ইন্দিরা গান্ধী, তৃতীয় অটল বিহারী বাজপেয়ী। আগামী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পছন্দ কে? এখানেও কার্যত ধরাছোঁয়ার বাইরে মোদী। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী মোদীই থাকুন চাইছেন ৫৩ শতাংশ মানুষ। রাহুল গান্ধীকে ১৩ শতাংশ, সনিয়া গান্ধী ৭ শতাংশ এবং অমিত শাহকে ৪ শতাংশ মানুষ পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনে করছেন।

প্রশ্ন করা হয়েছিল, জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার সিদ্ধান্ত কি সংবিধানের উপর আক্রমণ? ৫০ শতাংশ মানুষ বলছেন হ্যাঁ। আর ৩৪ শতাংশের মতে এই সিদ্ধান্ত সংবিধানের উপর হামলা নয়। ৫২ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন সংখ্যালঘুরা সিএএ ও এনআরসি নিয়ে ভয়ের মধ্যে আছেন। পাশাপাশি ৫৩ শতাংশ মানুষ মনে করছেন তাদের ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। ৪৩ শতাংশ মানুষ মনে করছেন বেকারত্ব এবং অর্থনীতির মন্দাকে ঢাকতে সিএএ-এনআরসি নিয়ে আসা হচ্ছে।

এই সমীক্ষায় মানুষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বর্তমান ভারতের সবচেয়ে সমস্যার জায়গা কোথায়? সেখানে সর্বাধিক ৩২ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন বেকারত্বই সবচেয়ে বড় সমস্যা।

মোট ১৯ টি রাজ্যের ১২,১৪১ জন মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এই সমীক্ষা।

Comments are closed.