অনুর্ধ্ব ৫ শিশু মৃত্যুতে বিশ্বে শীর্ষে ভারত, ২০১৮-য় মৃত্যু প্রায় ৯ লাখ শিশুর, চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট ইউনিসেফের
২০১৮ সালে ভারতে অনুর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ৮ লক্ষ ৮২ হাজার। যা গোটা বিশ্বে সর্বাধিক। এর মধ্যে ৬৯ শতাংশ শিশুমৃত্যুর কারণ অপুষ্টি। ইউনিসেফের সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বুধবার ইউনাইটেড নেশনস চিল্ড্রেনস ফান্ডের (ইউনিসেফ) রিপোর্ট প্রকাশ হয়। সেই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালের মধ্যে ভারতে ৮ লক্ষ ৮২ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদের সকলেরই বয়স ৫ এর নীচে। ‘স্টেট অফ ওয়ার্ল্ডস চিল্ড্রেন ২০১৯’ শীর্ষক ইউনিসেফের এই রিপোর্ট প্রকাশ পেল এমন সময় যখন, গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের রিপোর্ট বলছে, দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ক্ষুধা। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে ১১৭ টি দেশের মধ্যে এবার ভারত ১০২ তম স্থানে।
ইউনিসেফের ‘স্টেট অফ ওয়ার্ল্ডস চিল্ড্রেন ২০১৯’ শীর্ষক রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০১৮ সালে বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক শিশুমৃত্যু হয়েছে ভারতে। ভারতের পরে নাইজেরিয়া। সেখানে ২০১৮ সালে ৮ লক্ষ ৬৬ হাজার শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে পাকিস্তান। সংশ্লিষ্ট বছরে ৪ লক্ষ ৯ হাজার শিশুমৃত্যু হয়েছে পাকিস্তানে। শিশুমৃত্যুর তালিকায় তারপরে রয়েছে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও ইথিওপিয়া। এই দুই দেশে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা যথাক্রমে ২ লক্ষ ৯৬ হাজার এবং ১ লক্ষ ৯১ হাজার।
ইউনিসেফের রিপোর্টে প্রকাশ, ভারতের প্রতি দুজনের একজন মহিলা রক্তাল্পতায় ভোগেন। কিশোরীদের মধ্যেও রক্তাল্পতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। এদিকে, প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ টি শিশুর (অনুর্ধ্ব ৫ বছর বয়স) মধ্যে ভিটামিন ‘এ’-র ঘাটতি আছে। প্রত্যেক ৩ টির মধ্যে ১ টি সদ্যোজাত শিশুর শরীরে ভিটামিন বি ১২-র অভাব এবং ভারতে প্রতি ৫ জনের মধ্যে ২ জন শিশু ভোগে রক্তাল্পতায়।
রিপোর্ট বলছে, ভারতের প্রায় ৩৮ শতাংশ শিশুই খর্বকায়তায় ভোগে। বিশ্বব্যাপী শিশুস্বাস্থ্যের উপর গবেষণা চালিয়ে ইউনিসেফ জানাচ্ছে, অপুষ্টিজনিত কারণে ভারতে ৬৯ শতাংশ শিশুর মৃত্যু হয়। বাদবাকি শিশুদেরও অপুষ্টিজনিত সমস্যা রয়েছে। ভারতীয় শিশুদের খর্বকায়তার হার ৩৫ শতাংশ, চাইল্ড ওয়াস্টিং অর্থাৎ বয়স অনুযায়ী ওজন ও উচ্চতা না বাড়া শিশুর হার ১৭ শতাংশ এবং ২ শতাংশ শিশুর ওজন প্রয়োজনের অতিরিক্ত বেশি।
ইউনিসেফের রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের মধ্যে প্রতি ৩ জন ৫ বছর বয়সের নীচের শিশুর মধ্যে ১ টি শিশু অপুষ্টি অথবা অতিকায়ত্বে ভোগে। বিশ্বব্যাপী এই সংখ্যাটা প্রায় ২০ কোটি। অন্যদিকে, ২০১৮ সালে ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, মরিশাস, কাতার এবং সিঙ্গাপুরে ৫ বছরের মধ্যে একটি শিশুরও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলে প্রকাশ ইউনিসেফের রিপোর্টে।