কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসনের পদ্ধতিগত বৈধতা নিয়ে প্রবন্ধ: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিশানায় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রবন্ধ লিখে এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিশানায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র ট্যুইট করে দাবি করলেন, প্রবন্ধে দেওয়া তথ্য ভুল। সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রকে প্রবন্ধ লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

বুধবার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে ‘Centre did not renew President’s rule in J&K in time, It is a gaffe that has had dire consequences’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ লেখেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গোপাল শঙ্করানারায়ণন। সেই প্রবন্ধে তিনি লেখেন, ২০১৮ র ১৯ শে ডিসেম্বর জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। ৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সিদ্ধান্তে অনুমোদন মেলে সংসদের। গোপাল শঙ্করানারায়ণনের দাবি, এর ফলে ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ থেকে পরবর্তী ৬ মাসের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়ে যায় জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যে। তারপরই তিনি লিখছেন, ১৮ ই জুনের আগে (৩ রা জানুয়ারি নয়) রাষ্ট্রপতি শাসনের সময়সীমা বাড়ানো না হলে সাংবিধানিকভাবে তা কাজ করা বন্ধ করে দেবে। এ প্রসঙ্গে ১৯৯৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। একই সাথে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সময় ভেঙে দেওয়া বিধানসভাও ফের কার্যকর হয়ে যাবে। প্রবন্ধে গোপাল শঙ্করানারায়ণন বলছেন, সরকার সেই সুযোগটি সম্ভবত হারিয়েছে। তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন আইনজীবী।

তাঁর মতে, সরকার রাষ্ট্রপতি শাসন জারি শেষ হওয়ার তারিখ ধরেছে ২ রা জুলাইকে। এজন্য ২৮ শে জুন লোকসভায় এবং ১ লা জুলাই রাজ্যসভায় অনুমোদন নেওয়া হয়। তার ফলে জম্মু-কাশ্মীরে ৩ রা জুলাই থেকে ফের ৬ মাসের জন্য পুনর্নবীকরণ হয় রাষ্ট্রপতি শাসন। প্রবন্ধে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বলছেন, যা অননুমোদনীয়। তার কারণ, রাষ্ট্রপতি শাসন ১৮ ই জুনই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এক্ষেত্রে একমাত্র উপায়, নতুন করে রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু করা।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর এই ব্যাখ্যাতেই তীব্র আপত্তি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্র পরপর ট্যুইটে দাবি করেছেন, এক্ষেত্রে সরকার কোনও ভুল করেনি। তাঁর দাবি, রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ ঠিকই, কিন্তু সেই বিজ্ঞপ্তির সংসদীয় অনুমোদন যেদিন পাওয়া যায়, রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তি সেদিন থেকেই কার্যকর বলে ধরা হয়। সংবিধানেও এমনই সংস্থান রয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখপাত্র।

একদিকে আইনজীবী দাবি করছেন, রাষ্ট্রপতি যেদিন বিজ্ঞপ্তি জারি করবেন, সেদিন থেকেই ৬ মাসের জন্য লাগু হয়ে যাবে রাষ্ট্রপতি শাসন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দাবি, রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তির অনুমোদন যেদিন সংসদ দেবে, সেদিন থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে জারি হবে রাষ্ট্রপতি শাসন, তার আগে নয়। সব মিলিয়ে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে নতুন করে চাপানউতোর, এবার বিতর্কের কেন্দ্রে গত বছর ডিসেম্বর মাসে জারি করা রাষ্ট্রপতি শাসন। যে ঘটনা নিয়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রবন্ধ লিখে রাজরোষে আইনজীবী।

Comments are closed.