ওরা কোন্দল করুক, আমাকে মুখ্যমন্ত্রী করে দিন, মহারাষ্ট্রের চাষির অভিনব আর্জি রাজ্যপালকে

মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে এখনও টানাপড়েন চলছে বিজেপি এবং শিবসেনার মধ্যে। কবে এই টানাপড়েন কাটবে, কেউ জানে না।
এদিকে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা গত অগাস্ট মাসের বন্যার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এরই মধ্যে বন্যাকবলিত বিড় জেলার এক কৃষক অভিনব আর্জি জানালেন রাজ্যপাল ভগর সিং কোশয়ারের কাছে। শ্রীকান্ত বিষ্ণু গাদালে নামে ওই কৃষকের আর্জি, যতদিন না বিজেপি ও শিবসেনা সরকার গঠন নিয়ে নিজেদের জট কাটাতে পারছে, ততদিন তাঁকেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী করা হোক।
বৃহস্পতিবার রাজ্যপালকে পাঠানো চিঠিতে শ্রীকান্ত বিষ্ণু গাদালে লেখেন, গত অগাস্ট মাসের বন্যায় ভয়ঙ্কর ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তাঁদের অধিকাংশ ফসলই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের আশু প্রয়োজন একটা কার্যকরী সরকারের, যারা কৃষকদের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। মারাঠীতে লেখা ওই চিঠিতে বিড় জেলার কৃষক লেখেন, বিজেপি ও শিবসেনা নিজেদের জট কাটিয়ে সরকার গড়া পর্যন্ত তাঁকেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হোক। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর রাজ্যের কৃষকরা অথৈ জলে পড়ে আছেন। কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে যখন তাঁদের বোঝা হালকা করা উচিত, সেইসময় মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে কোন দল বসবে তা নিয়ে ঝগড়া চালিয়ে যাচ্ছে শিবসেনা এবং বিজেপি। তাই শিবসেনা-বিজেপির ঝগড়া না মেটা পর্যন্ত রাজ্যপালের উচিত মুখ্যমন্ত্রীর পদটি তাঁর হাতে ছেড়ে দেওয়া। শ্রীকান্ত বিষ্ণু গাদালের বিশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মহারাষ্ট্রের কৃষকদের যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে তাঁদের ন্যায়বিচার দিতে পারবেন তিনি।
মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে কৃষক অসন্তোষ ছিল রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। গত অগাস্ট মাসে ভয়ঙ্কর বন্যায় মহারাষ্ট্রের ৪ লক্ষ হেক্ট্ররের বেশি চাষের জমি ভেসে গিয়েছে। তাছাড়া ঋণের দায়ে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা তো ছিলই। গত কয়েক বছরে যে কত কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন, তার ইয়ত্তা নেই।
২৮০ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিজেপি ১০৫ টি এবং শিবসেনা ৫৬ টি পেয়েও সরকার গড়তে গড়িমসি চালিয়ে যাচ্ছে। শিবসেনার আসন সংখ্যা হাফ সেঞ্চুরি পেরতেই উদ্ধব ঠাকরে ৫০-৫০ ফর্মুলায় সরকার গড়ার ডাক দিয়েছেন। আদিত্য ঠাকরেকে অন্তত আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছে শিবসেনা। অন্যদিকে, পূর্ণ সময়ের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে নারাজ দেবেন্দ্র ফড়নবিস।
এই টানাপড়েনের মধ্যেই বিড় জেলার কৃষকের চিঠি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে।

Comments are closed.