দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাষা সংযত হওয়া উচিত, মোদীকে মনে করালেন মনমোহন

রাজনীতিতে ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে সংযত হওয়ার পরামর্শ দিলেন মনমোহন সিংহ।
রাজনীতি ক্ষেত্রে বিরোধী নেতা বা দলকে আক্রমণ করা রাজনীতিরই একটা অঙ্গ। কিন্তু ইদানীং বারবারই অভিযোগ উঠেছে, বর্তমান ভারতবর্ষে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা বক্তব্য আর রাজনৈতিক থাকছে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নেতা বা মন্ত্রীদের বক্তব্যে বিরোধীকে ‘ব্যক্তিগত’ আক্রমণ যেন একটা ‘ট্রেন্ড’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনও সেই আক্রমণ শালীনতার সীমাও লঙ্ঘন করছে।
কিছুদিন আগেই, কংগ্রেস নেতা রাজ বব্বর ভারতীয় টাকার মূল্য কমে যাওয়া প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন, ডলারের দাম প্রধানমন্ত্রীর মায়ের বয়সের সমান হয়ে যাচ্ছে। বব্বরের এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বিজেপি নেতৃত্ব। কড়া প্রতিক্রিয়া দেন মোদীও।
কিন্তু তার ঠিক একদিন পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে ছত্তিশগড়ে ভোটের প্রচারে গিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁর রোষের মুখে পড়ে নেহরু ও গান্ধী পরিবার। বিরোধীদের সমালোচনা প্রসঙ্গে মোদীর প্রতিক্রিয়া ছিল, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর ‘নানা-নানি, দাদা-দাদি’ গত ১০০ বছরে কী করেছে ছত্তিশগড়ের প্রগতি ও উন্নয়নের জন্য।
এবার মোদীর এই ব্যক্তিগত আক্রমণ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংহ। তিনি মনে করালেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বক্তব্য রাখতে গেলে ভাষা ‘সংযত’ করতে হয়। মোদীকে তাঁর কটাক্ষ, বিশেষ করে যে রাজ্যগুলিতে এখনও সরকার গঠন করতে পারেনি বিজেপি, সেখানে প্রচার করার সময় ভাষা বা শব্দ সম্পর্কে ‘বিশেষ নিয়ন্ত্রণ’ জরুরি। মোদীকে তাঁর উপদেশ, মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে দল বা আদর্শের ভেদাভেদ করে উন্নয়নের কাজ করা সমালোচনাযোগ্য। এপ্রসঙ্গে নিজের উদাহরণ দিয়ে মনমোহন বলেন, তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্ব কালে তিনি এরকম বাছ-বিচার করেননি। চাইলে বিজেপি মধ্যপ্রদেশ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের থেকে জেনে নিতে পারে।
প্রসঙ্গত, মোদীর ছত্তিশগড়ের বক্তব্য ঘিরে সমালোচনায় মুখর হয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে বলেন, অপ্রধানমন্ত্রিত্ব সুলভ আচরণ। প্রচারে বিরোধীকে আক্রমণ করতে গিয়ে মোদী দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করছেন বলে খোঁটা দেন রমেশ।

Comments are closed.