#মিটুঃ ইন্ডিয়া টুডের এক্সিকিউটিভ এডিটার গৌরব সাওন্তের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনলেন মহিলা সাংবাদিক

প্রাক্তন সাংবাদিক এবং সম্পাদক এম জে আকবরের পর ফের যৌন হেনস্থার অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে।
এবার এক মহিলা সাংবাদিককে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল ‘ইন্ডিয়া টুডে’র এক্সিকিউটিভ এডিটার গৌরব সাওন্তের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম ‘এন ডি টিভি’তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদ্যা কৃষ্ণাণ নামে এক মহিলা সাংবাদিক গৌরব সাওন্তের বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ এবং তাঁকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন। এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যে বলে দাবি করেছেন গৌরব সাওন্ত। পাশাপাশি, ওই মহিলা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ‘এন ডি টিভি’র পক্ষ থেকে ‘ইন্ডিয়া টুডে’ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছে, ‘এবিষয়ে তাদের কিছু বলার নেই। কারণ, যে সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মহিলা সাংবাদিক অভিযোগ করেছেন, তখন গৌরব সাওন্ত ‘ইন্ডিয়া টুডে’তে ছিলেন না। গৌরব সাওন্ত তাদের জানিয়েছেন, তিনি আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন’।
‘এন ডি টিভি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদ্যা কৃষ্ণণ অভিযোগ করেছেন, ‘তিনি তখন (২০০৩ সালে) ‘দ্য পাওনিয়ার’ পত্রিকায় সবে যোগ দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি প্রথম বাইরের অ্যাসাইনমেন্টে গিয়েছিলেন পঞ্জাবের বিয়াসে ভারতীয় সেনার এক অনুষ্ঠানে। সেই সময় ডিফেন্স করসপন্ডেন্ট হিসেবে পরিচিত মুখ গৌরব সাওন্তও সেই একই অ্যাসাইনমেন্টে যান। ওই ট্যুরে তিনিই ছিলেন একমাত্র মহিলা সাংবাদিক। একদিন সেনাবাহিনীর গাড়িতে যাওয়ার সময় গৌরব সাওন্ত ঠিক তাঁর পেছনের সিটে বসেছিলেন।’ বিদ্যা কৃষ্ণাণের অভিযোগ, ‘পেছন থেকে গৌরব সাওন্ত তাঁর ঘাড়ে হাত দেন। তারপর তাঁর বুকের দিকে হাত বাড়াতে থাকেন। তিনি সাহস করে কিছু বলতে পারছিলেন না। ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল।’


পড়ুনঃ #মিটুঃ চিফ রিপোর্টার দেবদূত ঘোষঠাকুর দিনের পর দিন আমায় যৌন হেনস্থা করেছেন, কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেয়নি আনন্দবাজার পত্রিকা। উলটে আমাকে ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়


বিদ্যা কৃষ্ণাণের আরও অভিযোগ, ‘সেদিন রাতেই গৌরব সাওন্ত হোটেলে তাঁর ঘরে আসেন। সোজা ঢুকে পড়েন ঘরে। তাঁকে বলেন, তাঁর সঙ্গে বাথটবে সময় কাটাতে চান।’ মহিলা সাংবাদিকের অভিযোগ, ‘এরপরই গৌরব সাওন্ত নিজের প্যান্টের চেন খুলে ফেলেন।’ সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যা কৃষ্ণাণ জোরে চিৎকার করতে শুরু করেন। চিৎকার শুনে গৌরব সাওন্ত তাঁর ঘর থেকে চলে যান।
‘এন ডি টিভি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই সময় তাঁর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটা সত্ত্বেও, তিনি অভিযোগ জানাতে পারেননি। তার একটা বড় কারণ, তাঁর নিজের সামাজিক সম্মান। এমনকী, তিনি যে সংস্থায় কাজ করতেন, সেই ‘দ্য পাওনিয়ার’ কর্তৃপক্ষের কাছেও তিনি গৌরব সাওন্তের ব্যাপারে অভিযোগ জানাতে পারেননি।


পড়ুনঃ #মিটুঃ আনন্দবাজার পত্রিকা, ক্ষমতার এক মূর্তমান প্রতীক, যেখানে মহিলাদের প্রতিদিন গিলোটিনে চাপানো হয়


সম্প্রতি, তনুশ্রী দও অভিনেতা নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনার পরই ‘#মিটু’ ব্যবহার করে বিভিন্ন মহিলার বক্তব্য গোটা দেশে প্রায় আন্দোলনের চেহারা নেয়। বিভিন্ন পেশায় একের পর এক বিখ্যাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনতে শুরু করেন বহু মহিলা। যার জেরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন প্রাক্তন সাংবাদিক, সম্পাদক এম জে আকবর। যৌন হেনস্থা এবং মহিলাদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ ওঠে বিজ্ঞাপন জগতের সুহেল শেঠ, টাটা গোষ্ঠীর তাজ হোটেলস-এর রাকেশ সারনা থেকে শুরু করে সঙ্গীত পরিচালক অনু মালিকসহ বহু ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অনেকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। এবার ফের এক মহিলা সাংবাদিক যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনলেন দেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’র এক্সিকিউটিভ এডিটারের বিরুদ্ধে।


পড়ুনঃ #মিটুঃ ‘আমি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলি না’, আনন্দবাজার পত্রিকায় যৌন হেনস্থার অভিযোগ প্রসঙ্গে বললেন প্রাক্তন প্রধান সম্পাদক অভীক সরকার


 

Comments are closed.