দেশের অর্থনীতির হাল বেহাল। চাকরি নেই। বাজারে নেই চাহিদা। ফলে পাল্লা দিয়ে কমছে বিনিয়োগ। রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণও আকাশ ছোঁয়া। এই পরিস্থিতিতে আইএমএফ কর্তা গীতা গোপীনাথ থেকে শুরু করে সদ্য নোবেল পাওয়া অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি, মোদী সরকারকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রায়োরিটি বা অগ্রাধিকার ঠিক করার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু মোদী সরকার ব্যস্ত আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজে। কী সেই কাজ? এবার রাস্তা-ঘাটে ঘুরে বেড়ানো গরুদের সারোগেট হিসেবে ব্যবহার করে ‘এলিট গরু’ প্রজননের পরামর্শ দিল কেন্দ্রীয় পশু পালন ও দুগ্ধ উৎপাদন মন্ত্রক (ডিএইচডি)।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের দাবি, এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে। মালিকহীন গরুদের যেমন আশ্রয় মিলবে, তেমনি বেশি দুধ উৎপাদনকারী গরুর প্রজননও সম্ভব হবে।
২০ তম পশুগণনা (২০১৯) রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে ২০১২ সালের গণনা অনুযায়ী, দেশে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো গবাদি পশুর সংখ্যা ৫২ লক্ষ ৯০ হাজার। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশেই এই সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ। এই অভিভাবকহীন গরুদের জন্য নয়া পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। সম্প্রতি পশু পালন মন্ত্রকের কমিশনার প্রবীণ মালিক দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন, রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো গরুদের সারোগেট হিসেবে ব্যবহার করে ‘এলিট’ গরু তৈরি হবে। তাঁর মতে, ঘুড়ে বেড়ানো গরুদের সারোগেট হিসেবে ব্যবহার করলে বিশেষ সুবিধা আছে। ক্রস ব্রিডের সংকরায়নের ফলে ‘শক্তিশালী’ ও বেশি দুধ উৎপাদনকারী গরুর প্রজনন হবে। মালিকের কথায়, এর লাভজনক দিকটা মাথায় রেখেই তাঁর এই পরিকল্পনা। তিনি জানান, ইতস্ততভাবে ঘুরে বেড়ানো গরুদের সারোগেট হিসেবে ব্যবহারের কাজ দেশজুড়ে করার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের। প্রবীণ মালিকের কথায়, আমরা সাধারণ মানুষকে দেখাতে চাই, কীভাবে বন্ধ্যা পশুকেও কাজে লাগানো যায়। তাছাড়া দুধ, ঘি, গোমূত্রকেও আরও ভালোভাবে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি জানান, এই একই পদ্ধতিতে ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড সুফল পেয়েছে।
কেন্দ্রীয় পশুপালন দফতরের এই পরামর্শকে সদর্থক পদক্ষেপ বলে মনে করছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর এগ্রিকালচার রিসার্চের প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেক্টর এম এল পাঠক। একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সাহায্য করবে এই উদ্যোগ। রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো গবাদি পশুরা জন্মগতভাবে নিম্নতর হয়। কিন্তু কেন্দ্র যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে উচ্চ প্রজননশীল গরু তৈরি করা যাবে। তাঁর কথায়, এই গরুগুলোকে ব্যবহারের জন্য আদর্শ সময় ২ থেকে ১২ বছরের মধ্যে।