Oxford’s COVID Vaccine – কবে আসছে, কী বলছে গবেষণা, সোমবার আসবে কি কোনও সুখবর?

দেশ হোক বা বিদেশ, করোনার ভ্যাকসিন কবে আসছে, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। করোনা ত্রাসে আতঙ্কিত সারা বিশ্বের নজর সেদিকেই। কিছুদিন আগে রাশিয়ার সেচনেভ ইউনিভার্সিটি দাবি করে, তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল শেষ। শীঘ্রই তা বাজারে আনার পরিকল্পনা চলছে। এর মধ্যেই করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে ভালো খবর শুনিয়েছে ব্রিটেনের Oxford University. কবে আসছে অক্সফোর্ডের COVID Vaccine?

 

অক্সফোর্ডের করোনা টিকা (COVID Vaccine by Oxford University)

Oxford’s COVID Vaccine Update

 

ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম আইটিভির পলিটিক্যাল এডিটর রবার্ট পেস্টন একটি সূত্র মারফত দাবি করেছিলেন, অক্সফোর্ড তাদের প্রতিষেধক তৈরির সহযোগী বায়োফার্মা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা-কে নিয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করতে পারে। প্রকাশ হতে পারে প্রথম পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালের তথ্য।

যদিও বৃহস্পতিবার ল্যান্সেট মেডিক্যাল জার্নালে বলা হয়েছে, অক্সফোর্ফ ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের তৈরি প্রতিষেধকের কার্যকারিতা সম্পর্কিত প্রথম দফার হিউম্যান ট্রায়াল ডেটা প্রকাশ করবে আগামী ২০ জুলাই। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়ে গিয়েছে। ব্রাজিলের বিশাল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবীর উপর টিকা প্রয়োগ করে এর কার্যকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রভৃতি যাচাই করছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। প্রতিষেধক উন্নতির দায়িত্বে থাকা গবেষকরা প্রথম পর্যায় ট্রায়ালের তথ্য সর্বসমক্ষে আনবেন আগামী ২০ জুলাই।

 

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ল্যান্সেট জার্নালের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালে পাওয়া তথ্যের চূড়ান্ত পর্যায়ের সম্পাদনা চলছে। আমরা আশা করছি আগামী সোমবার, ২০ জুলাই এ বিষয়ে পুরো তথ্য প্রকাশ করতে পারব।

 

কবে বাজারে আসতে পারে Oxford’s Double Defense Vaccine?

গত মাসেই ব্রাজিলে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবীর উপর চ্যাডক্স-১ প্রতিষেধকের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছিল অক্সফোর্ড। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, তাতে অভাবনীয় সাড়া মিলেছে। আইটিভির রাজনৈতিক বিভাগের সম্পাদক রবার্ট পেস্টনের কথায় ‘সুখবর আসছে জেনে আর চেপে রাখতে পারলাম না। যেটুকু শুনেছি, তাতে অক্সফোর্ডের গবেষকদের আশা মতোই এর প্রয়োগে মানব শরীরে যথাযথ অ্যান্টিবডি ও টি-সেল (ঘাতক কোষ) তৈরি হচ্ছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে অক্সফোর্ড তো এখনও তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ের রিপোর্টই পেশ করেনি! বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বাঁদরের উপর যে পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়ার শুরু হয় শীঘ্রই তার রিপোর্ট প্রকাশ করতে চলেছে ল্যান্সেট। তাদের এই গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন ইবোলা প্রতিষেধক তৈরিতে দিশা দেখানো বিজ্ঞানী সারা গিলবার্ট। গবেষকদের একাংশ বলছেন, আগামী সেপ্টেম্বরেই ভ্যাকসিন আনার ব্যাপারে তাঁরা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত।

 

কোথায় দাঁড়িয়ে অন্যান্য ভ্যাকসিনের কাজ? (Oxford’s COVID Vaccine Update)

Double Defense Vaccine by Oxford

 

সারা বিশ্বে করোনার শিকার হয়েছেন প্রায় ১ কোটি ৩৫ লক্ষ মানুষ। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার। এই মুহূর্তে নানা দেশে অন্তত ১০০ টি করোনা ভ্যাকসিন তৈরির কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে গত বুধবার তাদের প্রতিষেধকের হিউম্যান ট্রায়ালে সাফল্য মিলেছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংস্থা মডার্না। গবেষকেরা জানান, ৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবীর উপর প্রতিষেধকের দুটি ডোজ দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে করোনা-মুক্ত মানুষের গড় অ্যান্টিবডির থেকেও বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবডি মিলেছে। ঝিমুনি, মাথাধরার মতো কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে বটে, কিন্তু সব স্বেচ্ছাসেবীরাই ভাল আছেন। আগামী মে মাসে তাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল এবং ২৭ জুলাই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হবে বলে জানাচ্ছে মডার্না। আমেরিকার আশা, আগামী বছরের শুরুতেই কার্যকরী ভ্যাকসিন নিয়ে চলে আসতে পারবে তারা।

এই বুধবারই রাশিয়ার প্রতিরক্ষা দফতর থেকে জানানো হয়েছে, তাদের তৈরি ভ্যাকসিন আশাব্যঞ্জক ফলাফল দিয়েছে। রাশিয়ার এক আর্মি হাসপাতালে ২৮ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর ১৮ জন স্বেচ্ছাসেবীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের শরীরে দারুণ কাজ করেছে ভ্যাকসিন। আবার ৪২ তম দিনে ওই স্বেচ্ছাসেবীদের পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা দফতর।

এদিকে চিনের তরফে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়, জার্মানির এনবায়োটেকের সঙ্গে যুগ্মভাবে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের কাজ প্রথম পর্যায়ে রয়েছে।

ভারতের দ্বিতীয় সংস্থা হিসেবে তাদের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাইডাস ক্যাডিলাও। ভারতের করোনা টিকা নিয়ে আশাবাদী মাইক্রোসফট কর্তা বিল গেটস। কোভিড ভ্যাকসিন তৈরি করতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংস্থাকে আর্থিক সাহায্য করছে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

পেনসিলভেনিয়ার বায়োটেক ফার্ম ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালসের ভ্যাকসিন গবেষণায় সামিল বিল গেটসও। জানা গিয়েছে, এই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গবেষণার কাছে যাবতীয় আর্থিক অনুদান দিয়েছে বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস। গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গাভি)-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের নানা দেশে ভ্যাকসিনের ডোজ পৌঁছে দেওয়ার জন্য আগাম পরিকল্পনাও করে রেখেছেন তিনি। সেই বিল গেটসের কথায়, আমি অভিভূত যে ভারত শুধু নিজের কথাই ভাবছে না। সারা বিশ্বে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। এইভাবে সংহতির পথে চললেই অতিমহামারী ঠেকানো সম্ভব হবে।’

Comments are closed.