শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট যে রায়ই দিক না কেন, ঘোষিত ১, ৩, ৫ মে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েত মামলার যা গতিপ্রকৃতি এবং ভোট পরিচালনার যে নিয়ম-কানুন আছে, তাতে ওই সময়ে কোনওভাবেই পঞ্চায়েত ভোট করা সম্ভব নয় বলেই রাজ্য সরকার সূত্রের খবর। নবান্ন এবং পঞ্চায়েত দফতরের শীর্ষ অফিসাররা গত দু’তিনদিন ধরে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে দফায়-দফায় আলোচনা করেছেন। প্রশাসনিক কর্তারা, মনে করছেন, খুব তাড়াতাড়ি হলেও মে মাসের শেষের আগে ভোট হওয়া অসম্ভব। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর ন্যূনতম ২১ দিন এবং সর্বোচ্চ ৩৫ দিনের মধ্যে ভোট করাতে হয়। এবার মনোনয়ন জমার শেষ দিন ছিল ৯ এপ্রিল। সেই অনুযায়ী তার সঙ্গে ২১ দিন যোগ করে ১ মে ভোট হতে কোনও অসুবিধে ছিল না। কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চের স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই পাঁচ-ছ’দিন পঞ্চায়েত দফতর কোনও কাজ করতে পারেনি। এই অবস্থায় শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট যে রায়ই দিক না কেন, ১,৩ এবং ৫ মে ভোট হওয়া কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছে নবান্ন।
পঞ্চায়েত দফতরের বক্তব্য, মনোনয়ন জমা হওয়ার পর ভোট কর্মীর তালিকা তৈরি, তাদের ট্রেনিং, ভোটের জিনিসপত্র জোগাড় করা সব মিলে যে কাজ থাকে তা ২১ দিনেই করা অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। শুক্রবার আদালত যাই রায় দিক, তা যদি রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং সমস্ত রাজনৈতিক দল মেনেও নেয়, তা হলেও ১০ দিনের মধ্যে প্রশাসনিক সব কাজ শেষ করে ১ মে প্রথম দফায় নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। আর আদালত যদি মনোনয়ন পেশের জন্য দিন বাড়াতে বলে তবে তো আইনতই ঘোষিত দিনে ভোট করা সম্ভব হবে না। সূত্রের খবর, কলকাতা হাইকোর্টের রায় পছন্দ না হলে ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যেই ডিভিশন বেঞ্চে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে। রাজনৈতিক মহলের খবর, শুক্রবার পঞ্চায়েত মামলার রায় যাই হোক না কেন, কোনও না কোনও রাজনৈতিক দল ডিভিশন বেঞ্চে যাবে এবং শেষমেশ তা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। প্রসঙ্গত, গত ২০১৩ সালে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলার শেষে জুলাই মাসে ভোট হয়েছিল।