বড়দিনে কোভিডবিধি মেনে পার্ক স্ট্রিটে কার্নিভাল শুরু ২১ ডিসেম্বর, উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী, পর্যটন দফতরের বিশেষ উদ্যোগ
করোনা পরিস্থিতিতে কোপ পড়েছে দুর্গাপুজো, কালীপুজোর মতো উৎসব ও অনুষ্ঠানে। কমেছে জাঁকজমক। এবার সামনে বড়দিন। করোনা এড়াতে অন্যান্য বছরের মতো বড় করে না হলেও ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করছে রাজ্য সরকারের পর্যটন দফতর। সেজে উঠছে কলকাতার পার্ক স্ট্রিট। একই সঙ্গে চলছে একাধিক চার্চ সাজানোর কাজ।
গত বছর সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রাল, ব্রেবোর্ন রোডের ক্যাথিড্রালে মাঝরাতের প্রার্থনায় শামিল হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি সূত্রের খবর, ২১ ডিসেম্বর পার্ক স্ট্রিটে বড়দিনের কার্নিভালের সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। পার্ক স্ট্রিটের ক্রিসমাস কার্নিভালের দায়িত্বে রাজ্য পর্যটন দফতর। সেই সঙ্গে চন্দননগর, কৃষ্ণনগর, বারুইপুর ও ব্যান্ডেল চার্চে আলোকসজ্জার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে পর্যটন দফতর।
তবে করোনাবিধি মেনে কথা এবার বড়দিনে চার্চগুলোয় দর্শনার্থীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। যেমন, অ্যালেন পার্কে বড়দিনের উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নিলেও, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ১০ দিনের উৎসবে আনন্দের মূল উপকরণ বাদ রাখা হয়েছে সেখানে। পার্ক স্ট্রিটের ফুটপাথ ও অ্যালেন পার্কে এই বছর খাবারের কোনও স্টল বসছে না বলে জানিয়েছেন কলকাতা ক্রিসমাস কার্নিভালের আয়োজকরা। পরিবর্তে অ্যালেন পার্কে নানা ধরনের সঙ্গীতানুষ্ঠান দেখেই এবারের বড়দিনে সন্তুষ্ট থাকতে হবে দর্শনার্থীদের।
এদিকে একশো বছরেরও বেশি পুরনো ঐতিহ্য ভেঙে এই বছর মিডনাইট মাস ও মাঝরাতের ক্রিসমাস ক্যারোল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা শহরের রোমান ক্যাথলিক চার্চগুলো। ওই চার্চগুলোয় বন্দনাসঙ্গীত সেরে ফেলা হবে ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে। তবে চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়ার আওতায় থাকা সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রাল-সহ বেশ কিছু চার্চে অন্যান্য বছরের মতো মধ্যরাতে শোনা যাবে যিশুখ্রিস্টের বন্দনাসঙ্গীত।
প্রতি বছর ২৫ শে ডিসেম্বর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভিড় বাড়তে থাকে পার্ক স্ট্রিটে। রাস্তার দু’পাশে কেক, সান্তা টুপি, ক্রিস্টমাস ট্রি-র পসরা সাজিয়ে তৈরি হন দোকানদাররা। বহু রঙ, আলো আর ক্রিস্টমাস ট্রিতে মোহময়ী রূপ নেয় পার্ক স্ট্রিট। বিভিন্ন মিউজিক্যাল পারফরমেন্স, রেস্তরাঁয় দেদার খানাপিনার মজা নিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ পার্ক স্ট্রিটে ভিড় জমান। অন্য সময়ের তুলনায় বিদেশি পর্যটকদের ভিড়ও থাকে চোখে পড়ার মতো।
তবে এবার পরিস্থিতি আলাদা। তাই নিয়ন্ত্রিত আয়োজনের মধ্য দিয়েই বড়দিন পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের পর্যটন দফতর। আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং ভিড় রুখতে পার্ক স্ট্রিট সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন হচ্ছে। রাজ্যের বিখ্যাত চার্চগুলিতে বড়দিনের ভিড় সামলাতে পুলিশ প্রশাসনের কাঁধে রয়েছে বাড়তি দায়িত্ব।