রেল স্টেশনের ‘ওয়াই-ফাই’কে কাজে লাগিয়ে মোবাইলে প্রস্তুতি, সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায় সাফল্য পেলেন কেরলের এক কুলি

আর্থিক প্রতিকূলতা ও পুঁথিগতবিদ্যার তালিমের অভাব। তার পাশাপাশি দৈনন্দিন টাকা রোজগারের চাপ। কিন্তু অদম্য জেদের কাছে হার মানল সমস্ত প্রতিবন্ধকতা। স্টেশনে কুলির কাজ করতে করতে হাজারটা বাধা জয় করে কঠিন চাকরির পরীক্ষায় পাশ করলেন কেরালার এক যুবক। পেশায় তিনি রেল ষ্টেশনের কুলি। ষ্টেশনের ‘ওয়াই ফাই’ এর সাহায্যে কাজের মধ্যেই পড়াশোনা করে কেরল সিভিল সার্ভিসের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন শ্রীনাথ কে। সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পাঁচ বছর আগে তিনি এর্নাকুলাম ষ্টেশনে কুলি হিসেবে কাজে যোগদান করেছিলেন। অন্যান্য কুলিদের মতোই তিনি মাল বহন করতেন। আর তার পাশাপাশি কানে মোবাইল আর ইয়ারফোনের সাহায্যে পড়াশোনা চালিয়ে যেতেন। কেরলের রাজ্য সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রশিক্ষণের জন্য একজন শিক্ষকও রেখেছিলেন শ্রীনাথ। শিক্ষকের সঙ্গে কথাও বলতেন মোবাইল ফোনে। মালপত্র বহন করতে করতেই ইয়ার ফোনে কথা বলে বলে সিভিল সার্ভিসের জন্য তৈরি হতেন তিনি। শ্রীনাথ জানান,’কুলির কাজ করার সময়ই সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন জটিল প্রশ্নের সমাধান তিনি মনে মনেই সমাধান করে ফেলতেন। কোথাও আটকে গেলে তা দেখে নিতেন মোবাইল ফোনে। রাতে কাজ শেষে সেগুলো নিয়ে আবার চর্চা করতেন। কেরল রাজ্য সিভিল সার্ভিসের ল্যান্ড রেভেনিউ দফতরে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে বলে জানান কেরালার মুন্নার গ্রামের বাসিন্দা শ্রীনাথ। মুন্নারের সবচেয়ে কাছের ষ্টেশনই হল এর্নাকুলাম। তাই রোজগারের খোঁজে সেখানেই গিয়েছিলেন তিনি। সংসারে অভাব, আর্থিক অনটন থাকায় বই কেনার ক্ষমতা ছিল না শ্রীনাথের। তাই রেল স্টেশনের বিনামূল্যের ‘ওয়াই -ফাই’ থেকেই প্রয়োজনীয় নোট ডাউনলোড করতেন মোবাইল ফোনে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ পরিকল্পনার অধীনে দেশের সমস্ত রেল ষ্টেশনে ‘ওয়াই ফাই’ পরিষেবা চালু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। বর্তমানে সারা দেশে মোট ‘ওয়াই ফাই’ ষ্টেশনের সংখ্যা প্রায় ৬৮৫টি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.