‘এপ্রিলের শেষে ভারতে করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছোবে’, সতর্কবার্তা দিলেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট কে শ্রীনাথ রেড্ডি

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও বৈঠকের পরই সামনে এসেছিল এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, আগামী দু’তিন সপ্তাহ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন এমন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা।
মঙ্গলবারই দেশে লকডাউনের মেয়াদ ৩ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই অবস্থায় দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট কে শ্রীনাথ রেড্ডি। ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছতে পারে এপ্রিলের শেষে, এমনই জানালেন কে শ্রীনাথ রেড্ডি। কোভিড ১৯ এর মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কমিটিতেও রয়েছেন রেড্ডি।
দ্য ইকনমিক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কী জানিয়েছেন তিনি?

 

প্রশ্ন: ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ কি সর্বোচ্চ স্তর বা পিকে পৌঁছে গিয়েছে?

কে শ্রীনাথ রেড্ডি: সংক্রমণ সূচকের ঊর্ধ্বগামীতাকে শ্লথ করতে সক্ষম হয়েছি। আমার মনে হয় এপ্রিলের শেষ নাগাদ আমরা পিকে পৌঁছোব।

 

প্রশ্ন: ভারতে কি কমিউটিনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গিয়েছে?

কে শ্রীনাথ রেড্ডি: প্রত্যেকটি আক্রান্ত দেশ এই দশার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। আমাদের কাজ হল, সেই পর্যায় এসে পড়াটাকে শ্লথ করে দেওয়া এবং যতটা সম্ভব প্রভাব কমানোর চেষ্টা করা। এবার প্রশ্ন হল, আমরা স্টেজ থ্রিতে পৌঁছে গিয়েছি কিনা তা জানতে প্রয়োজন বিশেষ কিছু তথ্য সমৃদ্ধ বিশ্লেষণ। এই কাজটি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেখানে জোরকদমে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।

 

প্রশ্ন: ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ বা কনটেনমেন্টের ক্ষেত্রে আমরা কতটা সফল? আপনার কি মনে হয় লকডাউন অব্যাহত রাখা উচিত?

কে শ্রীনাথ রেড্ডি: লকডাউনের অনেক সুবিধা। চেন পুরো ভাঙা সম্ভব না হলেও অন্তত ভাইরাস ট্রান্সমিশনের গতি কমিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে লকডাউন। তবে এই সময় জেলাওয়াড়ি নজরদারি আরও বাড়াতে হবে।
আসলে লকডাউন আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সামাজিক পরিস্থিতির হাতে বেশ কিছুটা মহামূল্যবান সময় তুলে দেয়। যা মহামারির বিরুদ্ধে লড়তে গেলে একান্তই প্রয়োজন। কী অদ্ভুত ব্যাপার দেখুন, এই সময় সমস্ত রাজনৈতিক মতপার্থক্যকে দূরে সরিয়ে রেখে হাতে হাত রেখে কাজ করে চলেছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলো। লকডাউন বাড়ানো হবে কিনা, তা নিয়েও সিদ্ধান্ত হয় মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে।
আমাদের প্রস্তুত হতে হবে এক অসম লড়াই জেতার জন্য। আর যুদ্ধে জিততে প্রয়োজনীয় সময় আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে লকডাউন। এবার পরিস্থিতি অনুযায়ী কৌশল বদলে বদলে জয়ের পথে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের।

 

প্রশ্ন: ভাইরাসটিকে কি ভারতে একটু দুর্বল মনে হচ্ছে? আবহাওয়ার উপর কি কিছু নির্ভরশীল?

কে শ্রীনাথ রেড্ডি: ভাইরাসের ধর্ম মিউটেট করা। ভারতে করোনাভাইরাসের যে প্রকৃতি তাতে সামান্য কিছু এদিক-ওদিক হতেই পারে। তবে গবেষণায় ভাইরাসটি ভারতে অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়ে পড়েছে, এমন কোনও তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে আমার অন্তত জানা নেই। এজন্য আমাদের আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে এখনও পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু এবং আইসিএমআর, কেউই এমন কোনও তথ্য খুঁজে পায়নি। তবে অন্যান্য করোনাভাইরাসের মতোই এই ভাইরাসও প্রবল গরমে কাহিল হয়ে পড়বে, এমনটা মনে করা যেতে পারে। তবে এ বিষয়েও গবেষণা চলছে। ফলে শেষ কথা বলার সময় এখনও আসেনি।

Comments are closed.