মহালয়ার পরের দিন থেকে শুরু হয় পুজো, ৪৭ বছর ধরে পুজো করছেন একজন পুরোহিত, নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত দুর্গাপুজো আজও আবেগের

এলাকার মানুষের কাছে এই পুজোর আলাদা টান রয়েছে। জেলার অন্য থিমের পুজো ও বারোয়ারি পুজো ছেড়ে এখানে পুজোর একদিন হলেও ঘুরতে আসেন সবাই। দক্ষিন ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার কোদালিয়ার বসু পরিবারের পুজো মণ্ডপে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। মহালয়ার পরের দিন থেকে এখানে শুরু হয় পুজো।  প্রতিমা সাবেকি। বিগত ৪০ বছর ধরে এখানে  প্রতিমা বানাচ্ছেন সোনারপুরের হরহরিতলার তুষ্টুপদ মিশ্র। বসু বাড়ির ঠাকুর দালানেই তৈরি হয় প্রতিমা। পুরোহিত সজল চক্রবর্তী ১৯৭৫ সাল থেকে করছেন এই পুজো। তিনি জানান, নিজে না দেখলেও তাঁর বাবা এই বাড়ির পুজোয় দেখেছেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুকে।

প্রায় ২৫০ বছরের পুরানো এই পুজো। এলাকার মানুষের কাছে এটি নেতাজীর বাড়ির পুজো বলেই পরিচিত। মায়ের সঙ্গে কোদালিয়ার এই বাড়িতেই দুর্গাপুজোর সময় আসতেন ছোট্ট সুভাষ বলে শোনা যায়। শৈশব, কৈশোর থেকে শুরু করে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার সময় তিনি এই বাড়ির দুর্গাপুজোর সময় আসতেন। জেলে বা দেশের বাইরে না থাকলে এই নিয়মের অন্যথা হত না বলে শোনা যায়। এলাকার বয়স্করা অনেকেই দেখেছেন নেতাজীকে। বর্তমানে বসু পরিবারের সদস্যরা এই পুজোর আয়োজন করেন। এলাকার লোকেরা জানিয়েছেন, এখন এই পরিবারের বেশীরভাগ সদস্য দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকেন। কিন্তু পুজো ঠিক নিয়ম মেনেই হয়। অষ্টমীর দিন অঞ্জলীর সময় দেখা যায় সকলকে। বর্তমানে বসু পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় বসু ও চিত্তপ্রিয় বসু এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন।

রাজপুর সোনারপুর পুরসভার পুরপ্রধান পল্লব দাস জানিয়েছেন,  আজও সাবেকিপ্রথা ও ঐতিহ্য মেনে পুজোর আয়োজন করা হয়৷ নেতাজীর বাড়ির পুজো হওয়ায় এই পুজো দেখতে ভিড় জমান জেলার অনেকেই। অন্য জেলা থেকেও অনেকে এই পুজো দেখতে আসেন। জৌলুশ কিছুটা কম হলেও বসু পরিবারের এই পুজো জেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বনেদি বাড়ির পুজোর দাবিদার তা বলাই যায়।

Comments are closed.