সমুদ্র ভালোবাসেন? ঘুরে আসুন রাজ্যের এই সি-বিচগুলিতে, জেনে নিন, কীভাবে যাবেন, কতক্ষণ লাগবে?

আপনি কি সমুদ্র ভালোবাসেন? ভালোবাসেন কোনও এক নির্জন দ্বীপে বসে একা নিজের মধ্যে হারিয়ে যেতে বা পড়ন্ত বিকেলে সমুদ্রের ঢেউয়ে নিজের প্রিয় মানুষটির সঙ্গে একটু পা ভিজিয়ে নিজের মনের কথা বলতে? তাহলে বেড়িয়ে পড়ুন কলকাতা থেকে অল্প দূরের এই সমুদ্র সৈকতগুলিতে। দিঘা, মন্দারমনি তো আছেই। এ ছাড়া রাজ্যে রয়েছে আরও কয়েকটি সি বিচ। সেগুলির সৌন্দর্যও কম কিছু নয়। এই বিচগুলিকে আরও জনপ্রিয় করে তোলার জন্য রাজ্য সরকারের পর্যটন দফতর নানা উদ্যোগ নিয়েছে। জেনে নেওয়া যাক দিঘা, মন্দারমনির পাশাপাশি এই বিচগুলি সম্পর্কেও নানা তথ্য।

বকখালি

বঙ্গোপসাগরের কাছে এই সমুদ্র সৈকত নিঃসন্দেহে আপনার মন ভুলিয়ে দেবে। অন্যান্য সমুদ্র সৈকতের তুলনায় বকখালিতে এখনও কম মানুষজনই আসেন। কলকাতার অদূরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এই সৈকতে বেশিরভাগ মানুষ সপ্তাহ শেষের ছুটি কাটাতে আসেন। শহরের কোলাহল থেকে দূরে একা বা বন্ধুদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই আসতে হবে এই সমুদ্র সৈকতে। বকখালি থেকে আপনি ঘুরে আসতে পারেন ফ্রেজারগঞ্জ, হেনরি দ্বীপে। ফ্রেজারগঞ্জের মৎস্য বন্দর দেখতে ভালো লাগবে।

কীভাবে পৌঁছবেন?
কলকাতা থেকে ট্রেনে নামখানা। তারপর সেখান থেকে বকখালি যাওয়ার গাড়ি ভাড়া পাওয়া যাবে।
এছাড়াও সড়ক পথে কলকাতা থেকে কাকদ্বীপ হয়ে বকখালি পৌঁছতে পারেন।

থাকার জায়গা
সরকারি লজ আছে। আছে প্রচুর বেসরকারি হোটেল, লজ, গেস্ট হাউস।

ফলতা

ফলতার সমুদ্র সৈকতে এখন বেশ ভিড় হয়। শীতকালে এখানে পিকনিক করতেও আসেন অনেকে। অদূরেই দামোদর নদ এসে মিশেছে হুগলি নদীর সঙ্গে।

কীভাবে পৌঁছবেন?
কলকাতা থেকে মাত্র ঘণ্টা দেড়েকের রাস্তা। নিজের গাড়ি করে পৌঁছে যেতে পারেন। সরকারি, বেসরকারি বহু বাস আছে।

থাকার জায়গা
থাকার জন্য কিছু হোটেল গড়ে উঠেছে। বিলাসবহুল হোটেলও আছে। তবে অনেকেই ফলতায় গিয়ে দিনের দিনই ফিরে আসেন।

সাগরদ্বীপ
সাগরদ্বীপে গঙ্গা এসে মিলিত হয়েছে সাগরের সঙ্গে। মকর সংক্রান্তিতে এই সাগরসঙ্গমে ডুব দিতে লাখ লাখ ভক্তের সমাগম হয়। রাজ্য সরকার ওই সময় সাগরমেলার আয়োজন করে প্রতি বছর। দেশ বিদেশ থেকে ভক্তরা আসেন স্নান সেরে কপিল মুনির আশ্রমে পুজো দিতে।

কীভাবে পৌঁছবেন?

বাসে বা গাড়িতে কাকদ্বীপ। তারপর সেখান থেকে ফেরি পেরিয়ে সাগরদ্বীপ। এছাড়াও শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে কাকদ্বীপ বা নামখানা স্টেশন। তারপর টোটোতে করে ফেরি ঘাট। সেখান থেকে ফেরি পেরিয়ে গঙ্গাসাগর।

থাকার জায়গা

এখানেও অনেক সরকারি অতিথিশালা রয়েছে, আছে যুব আবাস। এ ছাড়া বেসরকারি হোটেলও আছে।

মন্দারমনি

আপনি যদি প্রকৃতিপ্রেমিক মানুষ হন, তা হলে মন্দারমনির সমুদ্র সৈকত আপনাকে টানবেই। এছাড়াও বিভিন্ন রকমের অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসেও অংশগ্রহণ করতে পারেন আপনি। সৈকতে বসে আপনি উপভোগ করতে পারেন অসাধারণ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য।

কীভাবে পৌঁছবেন?

ট্রেনে দিঘা বা কাঁথি। তারপর গাড়িতে। এছাড়া কলকাতা থেকে প্রচুর সরকারি, বেসরকারি বাসও আছে।

থাকার জায়গা
থাকার জায়গার কোনও অভাব নেই। ছোট বড় হোটেলের ছড়াছড়ি।

তাজপুর

জায়গাটি যেরকম মনোরম, তেমনই সুন্দর এই সমুদ্র সৈকতের পরিবেশ। এই সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য প্রচুর মানুষের কাছে অজানা। তাই খুব কম মানুষই ভিড় করেন এই সমুদ্র তটে। সম্প্রতি অবশ্য ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের।

কীভাবে পৌঁছবেন?

দিঘাগামী যে কোনও বাসে বালিসাই নেমে গাড়িতে করে পৌঁছে যেতে পারেন তাজপুর। এছাড়াও ট্রেনে দিঘা স্টেশনে নেমে গাড়ি ভাড়া করে তাজপুর যাওয়া যায়।

থাকার জায়গা
আজকাল ভিড় হচ্ছে বলে অনেক হোটেল তৈরি হচ্ছে। কিছু কিছু হোটেল হয়েও গিয়েছে।

দিঘা

দিঘা আর বাঙালি সমার্থক। দিঘায় যায়নি, এমন লোক সম্ভবত পাওয়া যাবে না। সারা বছরই দিঘায় ভিড় লেগে থাকে। টানা দু’তিন দিন ছুটি থাকলেই বাঙালি বেরিয়ে পড়ে দিঘার উদ্দেশে। দিঘা উন্নয়ন পর্ষদ এবং পর্যটন দফতর দিঘার চেহারাই বদলে দিয়েছে গত কয়েক বছরে।

কীভাবে পৌঁছবেন?

হাওড়া থেকে ট্রেনে দিঘা যাওয়া যায়। এছাড়াও ধর্মতলা, হাওড়া থেকে রয়েছে প্রচুর সরকারি, বেসরকারি বাস। রাজ্য পরিবহণ দফতরের বিভিন্ন বাস ডিপো থেকেও দিঘার বাস পাওয়া যায়। নিজেদের গাড়ি নিয়েও বেরিয়ে পড়া যায়।

থাকার জায়গা
সরকারি লজ রয়েছে প্রচুর। বিভিন্ন সরকারি দফতরের বাংলো রয়েছে অনেক। ছোট বড় হোটেল অসংখ্য।

শঙ্করপুর

দিঘা থেকে প্রায় ১০ কিমি দূরে অবস্থিত এই শঙ্করপুর সমুদ্র সৈকতে ইদানিং খুব ভিড় বাড়াচ্ছেন পর্যটকেরা। এখানে পর্যটকেরা মুলত অপরূপ প্রাকৃতিক শোভা প্রত্যক্ষ করতে আসেন। শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরও দেখার মতো।

কীভাবে পৌঁছবেন?

কলকাতা থেকে ট্রেনে অথবা বাসে দিঘা পৌঁছে সেখান থেকে গাড়িতে।

 

Comments are closed.