এলজিবিটি অধিকার নিয়ে কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেটে আন্তর্জাতিক সেমিনার

অধিকারের প্রশ্নে তাঁরা বরাবরাই বঞ্চিত। সঙ্গে পাওনা সমাজের বাঁকা চাহনি, অবহেলা। সমাজের এলজিবিটি (সমকামী, উভকামী, রূপান্তরকামী) কমিউনিটির মানুষদের নিজেদের সমানাধিকার, স্বীকৃতির দাবিতে এখনও লড়াই চালাতে হচ্ছে। দেশ তথা রাজ্যের এলজিবিটি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা নিজেরাও জানেন, সমানাধিকার অর্জনের প্রশ্নে এখনও তাঁদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এদেশের রূপান্তরকামীরা কিছু  স্বীকৃতি ও অধিকার পেলেও, সামাজিকভাবে আজও তাঁরা প্রায় একঘরে। আর সমকামী, উভকামীদের লড়াই তো আরও কঠিন। দেশের আইন তাঁদের বিপক্ষে। শতাব্দী প্রাচীন ব্রিটিশ আইনের (ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা) দৌলতে সমপ্রেম এদেশে আজও অপরাধের তকমা পায়। তবে শুধু ভারত নয়, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কার মতো দক্ষিণ এশিয়ার মতো দেশগুলিতেও পরিস্থিতি প্রায় সমান। একমাত্র ব্যতিক্রম নেপাল। সেখানে সমকামী বিবাহ’কে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।


কিন্তু কী ভাবছেন এই দেশগুলির এলজিবিটি কমিউনিটির সদস্যরা? নিজেদের অধিকারের প্রশ্নে তাঁদের কী কী বাধা, সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে? এসব বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী ২০ জুন কলকাতায় বসতে চলেছে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আসর। মূলত প্রান্তকথা নামে শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ‘সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ ক্যুয়ার অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক’ বা ‘সায়ন’ এর উদ্যোগে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সংগঠনের কর্ণধার বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এলজিবিটি আন্দোলনকে আরও বৃহত্তর অভিমুখ দিতে এবং এই কমিউনিটির যুব সদস্যদের মতামত, ভাবনা ও সমস্যার কথা পরস্পরের সঙ্গে আদানপ্রদান করতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ‘এলজিবিটিকিউআই ইয়ুথ এন্ড লাইভলিহুড ডিসক্রিমিনেশন’ শীর্ষক এই সম্মেলনে যোগ দেবেন ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার ও ভুটানের প্রায় ১০০ জন প্রতিনিধি। এই উদ্যোগে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মার্কিন কনস্যুলেট। এই দেশগুলির বিভিন্ন মার্কিন কনস্যুলেট থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য পেশ করবেন সেই সমস্ত দেশের প্রতিনিধিরা। কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেট এই আয়োজনের মূল কেন্দ্র। কলকাতার মার্কিন কনসাল জেনারেল ক্রেগ হল জানিয়েছেন, এলজিবিটি অধিকারের প্রশ্নে এই দেশগুলিতে একসঙ্গে লড়াইয়ের মঞ্চ প্রস্তুত করতেই এই সেমিনারের আয়োজন এবং তাতে সহযোগিতা করছে মার্কিন কনস্যুলেট। সুতরাং প্রতিবাদের কলকাতায়, এবার আন্তর্জাতিক আলোচনায় নিজেদের দাবি নিয়ে রামধনু রং ফোটাতে চলেছেন যৌন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.