৮৯ এর রবীন্দ্রনাথ, ২৭ এর সৃজন! সিঙ্গুর রক্ষার লড়াইয়ে কৃষক নেতা বেচারাম

সৃজনের কটাক্ষ, বিজেপি যদি শো-রুম হয়, তৃণমূল ওই শো-রুমের গুদাম

একুশের নির্বাচনে সিপিএমের তরুণ ব্রিগেডের অন্যতম মুখ তিনি। যে সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনকে হাতিয়ার করে তৃণমূল ৩৪ বছরের বাম দুর্গের পতন ঘটিয়েছিল বলে মনে করা হয়, সেই সিঙ্গুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। আমরাই সেই দল, যারা কারখানার দাবিতে ভোটে হেরেছি, কিন্তু পুরোনো দাবি থেকে সরিনি। আমরা শিল্পায়নের পক্ষে। বামেরা ক্ষমতায় এলে সিঙ্গুরে কারখানা হবে। বলছেন সিপিএমের তরুণ তুর্কি সৃজন ভট্টাচার্য।
সিঙ্গুর থেকে এবার বিজেপি প্রার্থী সদ্য তৃণমূল ত্যাগী ৮৯ বছরের রবীন্দ্রনাথ ভট্রাচার্য। অন্যদিকে সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনে তাঁরই ছায়াসঙ্গী বেচারাম মান্না প্রার্থী তৃণমূলের।
এবারের ভোটে সবথেকে প্রবীণ প্রার্থী সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই। বিপরীতে বামেদের তরুণতম মুখ সৃজন। বিজেপি প্রার্থী প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সৃজন জানালেন, প্রবীণ মানুষ, ওঁর প্রতি শ্রদ্ধা রইল। সেই সঙ্গে জানালেন, বিজেপি, তৃণমূলকে আলাদা দুটি দল মানতে তিনি নারাজ। সৃজনের কটাক্ষ, বিজেপি যদি শো-রুম হয়, তৃণমূল ওই শো-রুমের গুদাম।

সিঙ্গুরে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পরেই পার্টি কর্মীদের নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন গোটা কেন্দ্র। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক ছিলেন। বাম ছাত্র সংগঠনের নবান্ন অভিযানে তাঁকে দেখা গিয়েছে একেবারে সামনের সারিতে।

রাজনীতিতে কেন?
সৃজনের জবাব, এক আদর্শ শূন্য সমাজ চলছে, রাজনীতি মানেই খারাপ কাজ, এই অবস্থা পাল্টাতে হবে। পাশাপাশি সৃজনের বিশ্বাস, বিরোধী দলেরও যে সকল তরুণ তরুণী রাজনীতিতে আসছেন তাঁরা এই আদর্শ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই রাজনীতিতে আসছেন। বাম ছাত্র নেতার দাবি, মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে পরিকল্পনা নির্ধারকের চেয়ারে বসতে হবে। আর এর একমাত্র পথ রাজনীতি।

[আরও পড়ুন- ২৭ মার্চ প্রথম দফায় পূর্ব মেদিনীপুরের ৭ আসনে ভোট, ২০১৬, ২০১৯ সালে কী ফল ছিল?]

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী স্বপ্ন দেখেন, পাঁচ বছর পর বাংলা এমন একটা জায়গায় যাবে, যেখানে তরুণদের জীবনে কোনও অনিশ্চয়তা থাকবে না। তরুণ সিপিএম প্রার্থীর মত, বাংলার যুবকদের জীবনে কোনও নিশ্চয়তা নেই, যা থেকেই এত অসহিষ্ণুতা।
প্রচারে বেরিয়ে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
মুচকি হেসে সিপিএম প্রার্থী বললেন, আজ প্রচারে গিয়ে একটি দারুন ঘটনা ঘটেছে। সিঙ্গুরের অনেক অনিচ্ছুক কৃষকও আমাদের জানিয়েছেন, সিঙ্গুরে কারখানাটা হলে ভালো হত।
গত লোকসভায় সিপিএমের ভোট এসে ঠেকে ৭%। সম্প্রতি সমীক্ষাতেও তৃণমূল, বিজেপির ধারে কাছে নেই সংযুক্ত মোর্চার আসন সংখ্যা।

এই পরিস্থিতিতে জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?
২০১১ এর ভোটের ফলের অন্যতম নির্ধারক সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বাম যুবনেতা আত্মবিশ্বাস গলায় ভরে বলেন, ২ মে’র ফলাফলের পর বিধানসভার ভিতরে স্পিকারের ডান দিকে কিন্তু সংযুক্ত মোর্চাই বসবে। সংসদীয় দস্তুর বলে, সরকারপক্ষ স্পিকারের ডান দিকে বসেন।

Comments are closed.