জামিয়া, আলিগড়ে পড়ুয়াদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে সরব অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড থেকে বার্কলে

জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) পড়ুয়াদের উপর পুলিশি হামলার নিন্দা করে  তাঁদের পাশে দাঁড়াল অক্সফোর্ড, হাভার্ড, ইয়েল সহ ১৯ টি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় আন্দোলনরত পড়ুয়াদের  উপর পুলিশি আক্রমণের নিরপেক্ষ তদন্তেরও আর্জি জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও প্রাক্তনীরা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও উত্তরপ্রদেশের এএমইউ-র পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ওই বিবৃতিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে ‘অসাংবিধানিক’ ও ‘পক্ষপাতমূলক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জামিয়া মিলিয়া ও এএমইউ-র পড়ুয়াদের উপর ১৫ ডিসেম্বরের আক্রমণের তীব্র নিন্দা করা হয়।
এই বিবৃতিতে হাভার্ড, ইয়েল, কলম্বিয়া, নিউ ইয়র্ক, স্ট্যানফোর্ড , ব্রাউন, ইউনিভার্সিতি অফ মিচিগান, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে সহ ১৯ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও প্রাক্তনী স্বাক্ষর করেছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পৃথক বিবৃতিতে সাক্ষর করেছেন সেখানকার পড়ুয়া এবং শিক্ষকরা।

আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের উপর পুলিশি আক্রমণ একদিকে ভারতীয় সংবিধান অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে লঙ্ঘিত করেছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, নাগরিকের প্রতিবাদের অধিকার যে কোনও সাংবিধানিক গণতন্ত্রের ভিত্তি। কিন্তু জামিয়া মিলিয়া ও এএমইউ-র পড়ুয়াদের সেই অধিকারে আঘাত হানা হয়েছে। ভারতের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের উপর পুলিশি আক্রমণে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও প্রাক্তনীদের দাবি, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে পুলিশি প্রহরা প্রত্যাহার করা হোক। পাশাপাশি দিল্লি পুলিশ, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং সিআরপিএফের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
সোমবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রথম সারির অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা রাস্তায় নেমেছিলেন ছাত্রছাত্রীদের উপর পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে। কোথাও পড়ুয়ারা মোমবাতি মিছিল করেছেন। কোথাও ক্লাস না করে সভা করেছেন। কোথাও আবার ক্লাস কিংবা পরিক্ষা বয়কট করেছেন। এদিনের প্রতিবাদ দেখে ২০১৭ সালে জেএনইউ-তে ছাত্র বিক্ষোভের কথা মনে পড়ে যায় অনেকেরই। কলকাতা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই -সর্বত্র ওই দিন পড়ুয়াদের গর্জন শোনা গিয়েছে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে।

Comments are closed.