দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় নাকি বাড়তি খরচের বোঝা, BJP MLA’দের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছাড়ার নেপথ্যে কী?

সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দলীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বাংলার জয়ী ৭৭ জন বিধায়কদের সুরক্ষার জন্য বাড়তি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার প্রতি ভরসা রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিলেন বাংলার বিজেপি বিধায়কদের একাংশ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিতে অস্বীকার করা বিধায়কদের সংখ্যা ডজনের বেশি।

সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দলীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বাংলার জয়ী ৭৭ জন বিধায়কদের সুরক্ষার জন্য বাড়তি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

কিন্তু অমিত শাহের মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তে তোলপাড় পড়ে যায় গোটা দেশে। আইন শৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারে। তাহলে কোন অধিকারে বিজেপি বিধায়করা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাবেন? প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন শীর্ষ আমলারা।

[আরও পড়ুন-BJP MLA’দের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া অসাংবিধানিক! শাহের মন্ত্রককে তোপ প্রাক্তন আমলার]

বাংলায় রাজনৈতিক ভাবে পরাজয় হজম করতে পারছেন না অমিত শাহ। সরাসরি তোপ দাগেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তথা কিংবদন্তি পুলিশ অফিসার জুলিও রিবেইরো।

বছরের পর বছর ভিআইপি নিরাপত্তায় সিআরপিএফ ও সিআইএসএফকে মোতায়েন করতে করতে বাহিনীর কর্মদক্ষতা হ্রাস পেয়েছে বলেও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন জুলিও রিবেইরো।

বাহিনীকে নিয়ে খেলা চলছে! শাহ’কে তোপ জুলিও রিবেইরোর, BJP MLA’দের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে তোলপাড়

দেশব্যাপী তোলপাড়ের পর এবার বাংলার জয়ী বিজেপি বিধায়করাও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

সূত্রের খবর, বিজেপি বিধায়কদের একটি অংশের দাবি, সর্বক্ষণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ঘেরাটোপের মধ্যে থাকলে জনসংযোগে অসুবিধা হবে। তাছাড়া জওয়ানদের থাকা-খাওয়ার দায়িত্বও নিতে হবে বিধায়কদের। সেই আর্থিক অবস্থা সব বিধায়কের নেই। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিচ্ছেন একাধিক বিধায়ক। তালিকায় রয়েছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির শিখা চ্যাটার্জি, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির আনন্দময় বর্মন।

শঙ্কর ঘোষের কথায়, ছোট থেকে রাজনীতি করে বড় হয়েছি, এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক। এখন যদি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান সঙ্গে নিয়ে ঘুরি, সাধারণের মানুষের কাছে খারাপ প্রভাব পড়বে। একই সুরে কথা বলেছেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চ্যাটার্জি।

দলের এক নেতার কথায় দেশের কোনও রাজ্যে এই নিয়ম নেই। যদি বাংলায় চালু হয়, সেটা বিজেপির বিরুদ্ধে যাবে। বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগগা জানিয়েছেন, দলের বহু বিধায়কের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। ফলে ৪ থেকে ৬ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব না।

রাজনৈতিক মহলের অনুমান, বিজেপি বিধায়কদের একটি অংশের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ফিরিয়ে দেওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু দেশজুড়ে সমালোচনায় বিদ্ধ বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব নিজেই এই সিদ্ধান্তে অস্বস্তিতে পড়েছে। তাই বিধায়করা নিজেরা নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিলে, শ্যাম, কুল, দুই’ই বাঁচে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একটি অংশ।

Comments are closed.