দিল্লির তাবলিগ-ই-জামাতের ধর্মীয় সভায় বাংলা থেকে কতজন যোগ দিয়েছিলেন? তাঁদের চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টিনে পাঠাচ্ছে প্রশাসন

রাজ্যের উদ্বেগ বাড়ালো দিল্লির তাবলিগ-ই-জামাতে অংশ নেওয়া বাংলার বাসিন্দারা। তাঁদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে, খুব শীঘ্রই তাঁদের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হবে এবং আবশ্যিকভাবে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে বলে মঙ্গলবার বিকেলে জানান রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়, আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ এ পৌঁছেছে। দেশে ১ হাজার ৪৪০ জন আক্রান্ত, মৃত্যু হয়েছে ৪৮ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মারণ ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে ২২৭ জনের শরীরে। এর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে রাজধানী দিল্লি। গত সোমবার তেলেঙ্গনায় ৬ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়। জানা যায়, তাঁরা সকলেই দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকায় একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া আরও এক ধর্মীয় নেতার গত সপ্তাহেই শ্রীনগরে মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকের ২ বাসিন্দাও ওই সমাবেশে অংশ নেওয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপরেই তীব্র হয় আশঙ্কা। দিল্লিতে এই ধর্মীয় সমাবেশ ঘিরে গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও গত ১৩ থেকে ১৫ মার্চ দিল্লিতে এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তাবলিগ-ই-জামাতের ওই জমায়েতে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কিরগিজস্তান থেকে আসা বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি ছিলেন।
এ রাজ্যের কোন কোন ব্যক্তি ওই ধর্মীয় সভায় অংশ নিয়েছিলেন তার খোঁজ শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। তাঁদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন তাঁদের নিয়েও চিন্তিত রাজ্য প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, তাঁদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নিজামুদ্দিনের ওই সমাবেশে যোগ দেওয়া ভারতীয় ছাড়াও ফিলিপিন্সের এক বাসিন্দাও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে খবর। সোমবার বিকেল থেকে নিজামুদ্দিন এলাকায় একাধিক ব্যক্তির মধ্যে কোভিড ১৯ রোগের লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। তখনও মসজিদের ভিতরে ছিল প্রায় দেড় হাজার মানুষের জমায়েত। তাঁদের মধ্যে ৩০০ জনের শরীরে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা দেখা দেয়। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই, এলাকা ঘিরে ফেলেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। জামাতের সদর দফতর সিল করে দেওয়া হয়। অসুস্থ ব্যক্তিদের দিল্লির বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে কেন এমন ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়েছিল তা নিয়ে নিজামুদ্দিন মসজিদের মৌলানার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে এফআইআর করেছে দিল্লি সরকার। অন্যদিকে তেলেঙ্গানা সরকার সন্ধান শুরু করেছে তাদের রাজ্যে আর কারা এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দিল্লি গিয়েছিল।  ওই জমায়েতে বাংলা থেকেও বেশ কয়েকজন ছিলেন বলে জানতে পেরে নড়েচড়ে বসে রাজ্য প্রশাসন।

Comments are closed.