দু’জনেই দুরন্ত ফিল্ডার। নিমেষে ঝাঁপিয়ে পড়ে কত রান যে বাঁচিয়েছেন তার হিসেব নেই। দু’জনেই মিডল অর্ডারে ব্যাট হাতে বছরের পর বছর ধরে ভরসা যুগিয়েছেন টিম ইন্ডিয়াকে। আবার দলের প্রয়োজনে বল হাতেও ভেলকি দেখানোয় তাঁদের জুড়ি মেলা ভার। ভারতীয় দলের ইউটিলিটি ক্রিকেটার হিসেবে যুবরাজ সিংহ ও সুরেশ রায়নাকেই দেখে ক্রিকেট বিশ্ব। কিন্তু তাঁরা যে মুখের লড়াইয়েও একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছেন তা জানেন কি?
সম্প্রতি রায়নাকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন অধুনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া যুবরাজ সিংহ। বলেছিলেন, ক্যাপ্টেন ধোনির সময়ে অন্যায্য সুবিধা পেয়েছিলেন সুরেশ রায়না। এবার রায়নার পালা। তিনিও সপাটে যুবির মন্তব্যের জবাব দিলেন। জমে উঠল বাইশ গজের বাইরের লড়াই।
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে যুবরাজ বলে দেন, ২০১১ বিশ্বকাপের সময় সুরেশ রায়নার প্রতি ধোনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছিলেন। এবং তাই ফর্মে না থাকা সত্ত্বেও প্রথম একাদশে অলরাউন্ডার হিসেবে জায়গা পেতে সমস্যা হয়নি রায়নার। তিনি বলেন, সেই সময় রায়নার টাচ ভালো অবস্থায় ছিল না। অথচ ইউসুফ পাঠান বেশ ভালো খেলছিল। কিন্তু রায়নার প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে তাঁকে দলে রাখেন এমএস ধোনি।
এরই পাল্টা জবাব দিয়েছেন সুরেশ রায়না। বলে দিয়েছেন, ধোনি অবশ্যই তাঁর প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। তার একমাত্র কারণ তাঁর প্রতিভা এবং সেই প্রতিভার প্রতি করা সুবিচার।
রায়না বলেন, আমি তো বলব, এমএস আমাকে প্রবলভাবে সমর্থন করেছিল। তার কারণ আমার সেই প্রতিভা ছিল। আমি কী করতে পারি তা জানত ধোনি। সিএসকে কিংবা টিম ইন্ডিয়া, সব ক্ষেত্রেই আমি তার প্রমাণ রেখেছিলাম।
গত বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন যুবরাজ। সম্প্রতি একটি ইন্টারভিউতে তিনি বলেন, ধোনি তার চেন্নাই সুপার কিংসের সতীর্থদের প্রতি একটু বেশিরকম দুর্বল ছিল। আর তাই তাঁদের চূড়ান্ত একাদশে রাখতে দ্বিধা করত না। অথচ বিশ্বকাপে রায়না ভালো করতে পারছিল না, অন্যদিকে ইউসুফ পাঠান বেশ ভালো খেলছিল।
যুবরাজের এই মন্তব্যে স্বভাবতই অসন্তুষ্ট রায়না বলেন, কয়েকটি ম্যাচে খারাপ পারফর্মেন্স করলে ধোনি তাঁদের সতর্ক করে দিতেন। রায়না নিজেও বেশ কয়েকবার ক্যাপ্টেন কুলের সেই সতর্কবাণীর মুখে পড়েছেন। কিন্তু বারবারই পারফর্মেন্সের জোরে আবার ফিরেও এসেছেন। রায়না বলেন, ধোনি তাঁর প্রতিভা সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলেন, তাই সুযোগ পেতে সমস্যা হয়নি। রায়নার মতে, দিনের শেষে পারফর্মেন্সই আসল কথা। সম্প্রতি বিসিসিআইয়ের কাছে বিদেশের বিভিন্ন ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় খেলার অনুমতি চেয়েছেন সুরেশ রায়না। এখনও তা পাননি তিনি।
প্রসঙ্গত ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জয়ের ক্ষেত্রে যুবরাজের অবদান ভোলার নয়। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।