কী এমন ছবি নিজের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন ফিদেল কাস্ত্রোর নাতি, যা নিয়ে ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়!

জ্যোতি বসু যখন মুখ্যমন্ত্রী, তখন তাঁর ছেলে চন্দন বসুর ব্যবসা করা নিয়ে অনেকেই কটাক্ষ করে বলতেন, ‘কমিউনিস্ট ফাদারস ক্যাপিটালিস্ট সন’। কিন্তু সেটা প্রাক সোশ্যাল মিডিয়া যুগ। আজকের সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় কিউবায় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ৬০ বছরের মাথায় সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ফিদেল কাস্ত্রোর নাতির ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা বিভিন্ন ছবি।
ফিদেল কাস্ত্রো। কিউবার প্রবাদপ্রতিম জননেতা। কিউবা বিপ্লবের পুরোধা। আজীবন সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন দেখা, সেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে পথ চলা বিশ্ব বরেণ্য এক রাজনৈতিক, প্রতিবাদী ব্যক্তিত্ব। প্রায় পাঁচ দশক কিউবার রাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন ফিদেল। প্রয়াত হন ২০১৬ সালে। আজীবন পুঁজিবাদের বিরোধিতা করে এসেছেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কঠোর সমালোচক ছিলেন। প্রবল পরাক্রমী মার্কিনিদের চোখে চোখ রেখে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কিউবায়। মার্কিন রক্তচক্ষুর সামনে কোনও দিন মাথা নত করতে দেখা যায় কাস্ত্রোকে।
সেই ফিদেল কাস্ত্রোর নাতি টোনি কাস্ত্রো এবার খবরের শিরোনামে। ফিদেলের বছর ২০ র নাতির নানা কার্যকলাপ সমালোচনার ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যার কেন্দ্রে টোনি কাস্ত্রোর পোস্ট করা কিছু ইনস্টাগ্রাম ছবি। এমনিতে এত বছর ধরে কখনও সেরকমভাবে প্রকাশ্যে আসেনি ফিদেল কাস্ত্রো, বা তাঁর পরিবারের ব্যক্তিগত মুহূর্ত বা জীবনযাপনের ছবি। আম জনতা, আন্তর্জাতিক মিডিয়ার আগ্রহ থাকলেও বরাবরই তা থেকে গেছে লোকচক্ষুর আড়ালে। টোনি কাস্ত্রোর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলটিও একদা পাবলিক করা থাকলেও বর্তমানে তা প্রাইভেট। সাকুল্যে ১৩০০ র মতো ফলোয়ার তাঁর।

কিন্তু তাতে কী! নিজের জীবনযাত্রার যে ছবি ওই ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তিনি পোস্ট করেছিলেন, তা প্রকাশ্যে এনে খবর করেছে সাউথ ফ্লোরিডার একটি সংবাদমাধ্যম। এতেই ফাঁপরে পড়েছেন টোনি কাস্ত্রো। এতটা বিতর্ক হবে তা হয়তো বুঝতে পারেননি ফিদেল কাস্ত্রোর নাতি।

২০১৮ সালে নিজের স্পেনের বার্সেলোনা এবং মেক্সিকো সফরের একাধিক ছবি নিজের ইনস্টা প্রোফাইলে দিয়েছেন টোনি কাস্ত্রো। ২০১৭ সালের একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিএমডব্লু গাড়ি চালাচ্ছেন ফিদেলের নাতি! ২০১৮ সালের বর্ষবরণ পালন করছেন মাদ্রিদে ইয়টে চেপে। একটি ছবি, যেটি সাউথ ফ্লোরিডায় তোলা, সেখানে এক মহিলার সঙ্গে দেখা যাচ্ছে তাঁকে।
টোনি কাস্ত্রোর এই সব ছবি সামনে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ২০ বছরের টোনির জীবনযাপন হয়তো তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার, কিন্তু তিনি ফিদেল কাস্ত্রোর নাতি হওয়াতেই তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

কিউবার বেশ বহু নাগরিকও সরব হয়েছেন এবিষয়ে। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, এর থেকেই প্রমাণিত হয়, বর্তমান প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ডায়াজ ক্যানেল একজন পুতুল মাত্র। যখন ক্ষুধা, যন্ত্রণা, আর্থিক কষ্টে জর্জরিত দেশের অধিকাংশ নাগরিক, তখন এই ছবি তাঁদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটের মতো।

Comments are closed.