খেজুরের প্যাকেটে চরস ভরে বিদেশে পাচার, কলকাতা পুলিশের হাতে ধৃত ৩, উদ্ধার ২০ কেজি চরস

সুদৃশ্য পিচবোর্ডের বাক্সে উপর ও নীচে থাকত খেজুর। মাঝখানে সাজানো থাকত চরস। এভাবেই কলকাতা থেকে মাদক পাচার হত বিভিন্ন দেশে। গত শনিবার এমনই এক মাদকচক্রের হদিশ পেল কলকাতা পুলিশের টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। পাচারচক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ২০ কেজি চরস (charas seized)। অভিযুক্তদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ড্রাগ চক্রের যোগ থাকতে পারে সন্দেহ।
লালবাজার সূত্রে খবর, কিছুদিন ধরেই তাদের কাছে খবর আসছিল কলকাতা থেকে প্রচুর পরিমাণে মাদক চালান হচ্ছে বিদেশে। সেই মতো তদন্ত শুরু করেন অফিসাররা। পুলিশের খাতায় উঠে আসে জাকির নামে এক সন্দেহভাজনের নাম।

শনিবার রাতে কলকাতা থেকে জাকিরকে পাকড়াও করে পুলিশ। জোকা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে এই মাদক মজুত করা হত বলে তদন্তকারীদের কাছে স্বীকার করে জাকির। কলকাতা থেকে মূলত চিন ও হংকংয়ে মাদক পাঠাত তারা। ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে প্রায় ২০ কেজি চরস উদ্ধার করে পুলিশ। যার আনুমানিক বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা। ঘটনাস্থল থেকে আরও ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, নেপাল থেকে চরস আমদানি করা হত। কলকাতায় চলত প্যাকেটবন্দির কাজ। চরসের গুলিকে খেজুরের আকার দেওয়া হত। শুকনো খেজুর কালচে রঙের হওয়ায় চরসের সঙ্গে তা মিলে যেত। প্যাকেটের উপর-নীচে থাকত আসল খেজুর। আর মাঝখানে ভরা থাকত চরস। কার্গোতে খেজুর রফতানির নাম করে বুকিং করা হত। এমনকী মাদক ভর্তি খেজুরের প্যাকেট নিয়ে পাচারকারীরা বিমানেও উঠত বলে জানা যাচ্ছে। দমদম বিমানবন্দর থেকে সোজা পাড়ি দিত কুনমিংয়ে। তারপর চিনের বিভিন্ন জায়গায় তা পাঠানো হত।
ধৃতদের রবিবার দিল্লি থেকে কুনমিংয়ের বিমান ধরার কথা ছিল। সেখান পৌঁছনোর পর আর একটি টিম এই মাদক হংকংয়ে নিয়ে যেত। তদন্তকারীদের দাবি, এরা সাধারণ কুরিয়ার নয়। আন্তর্জাতিক ড্রাগ মাফিরা চক্রের সঙ্গে এদের যোগ রয়েছে। ধৃত জাকিরই অনলাইনে বিদেশের মাদক কারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। ধৃতদের জেরা করে চিনের কারা এই কারবারে যুক্ত তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।

Comments are closed.