মাওবাদীদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে নাশকতার আশঙ্কায় হাই অ্যালার্ট অন্ধ্র, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা, ছত্তিসগঢ় সীমানায়

সিপিআই মাওবাদীর ১৫ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে নাশকতার আশঙ্কা তেলেঙ্গানা, অন্ধ্র প্রদেশের সীমানাবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায়। পুলিশের তরফে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। পাশাপাশি সতর্কতা জারি হয়েছে ওড়িশা এবং ছত্তিসগঢ়ের বিভিন্ন মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাতেও।

১৯৬৯ এর ২২ শে এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয় সিপিআই (এমএল) জনযুদ্ধ। একই বছর ২২ শে অক্টোবর প্রতিষ্ঠা হয় মাওইস্ট কমিউনিস্ট সেন্টার (এমসিসি)। ২০০৪ সালের ২১ শে সেপ্টেম্বর দুই দল মিলিত হয়ে তৈরি হয় কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া মাওইস্ট বা সিপিআই মাওবাদী। পার্টি ঘোষণা করে, ৭ ই নভেম্বর পর্যন্ত তাদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন চলবে।

দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিপদ বলে একদা মাওবাদী পার্টিকে চিহ্নিত করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল মাওবাদী ধাঁচের রাজনীতি। কিন্তু তারপর কেটে গিয়েছে অনেকটা সময়। এদিকে মাওবাদী রাজনীতিতে এসেছে বহু বদল। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক গণপতি অসুস্থতার কারণে পদ ছেড়েছেন। সেই পদে বসেছেন মিলিটারি কমিশনের প্রধান অপেক্ষাকৃত কমবয়সী নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসব রাজ।

এই প্রেক্ষিতে এবার প্রতিষ্ঠা দিবস পালন শুরু করল সিপিআই মাওবাদী। মাওবাদীদের তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েক বছরে তারা ১৬ হাজার সশস্ত্র কর্মীকে হারিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ছত্তিসগঢ়, ঝাড়খণ্ড এবং অন্ধ্র-ওড়িশা সীমানার কয়েকটি পকেটে এখনও সক্রিয় মাওবাদীরা। এরই ফলশ্রুতিতে মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় মাওবাদী নাশকতার ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমে গিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

গত সোমবার জারি করা প্রেস বিবৃতিতে সিপিআই মাওবাদীর তরফে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রের তরফে যে তীব্র আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে, তা কোনও বিপ্লবী রাজনৈতিক দলের কাছেই নতুন কোনও ব্যাপার নয়। পার্টি ঘুরে দাঁড়াবে এবং একইভাবে হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখবে। পাশাপাশি বিবৃতিতে মাওবাদীরা জানিয়েছে, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার যেমন দাবি করছে, মাওবাদী আন্দোলন মৃত, তা কখনওই বাস্তবে হবে না।

এই প্রসঙ্গেই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন এসএসবির প্রাক্তন ডিজি এম ভি কৃষ্ণা রাও। তাঁর মতে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাওবাদী মতবাদ এখনও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। বর্তমানে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশে মাওবাদীরা গুটিয়ে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু এই রাজ্যগুলোর সীমানাবর্তী এলাকায় এখনও তাদের প্রভাব যথেষ্টই। ছত্তিসগঢ়েও মাওবাদীদের ভালো প্রভাব রয়েছে। মাওবাদীদের বর্তমান নেতৃত্বও মূলত এই দুই তেলেগুভাষী রাজ্য থেকেই এসেছেন। তাই এখনই বলা যায় না, যে মাওবাদ মৃত। তারা এখনও ভালোরকমভাবেই আছেন। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে তারা কিছুটা হলেও কোণঠাসা অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।

Comments are closed.