কাঠুয়ার প্রতিবাদে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ, কাশ্মীরের সমস্ত কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ রাজ্যের

কাশ্মীর উপত্যকার সমস্ত কোচিং সেন্টার আগামী তিন মাসের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল জম্মু-কাশ্মীর সরকার। রবিবার এই নির্দেশ দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের শিক্ষামন্ত্রী সৈয়দ মহম্মদ আলতাফ বুখারি। ইঙ্গিতটা আগেই ছিল। গত শুক্রবারই জম্মু-কাশ্মীরের শিক্ষামন্ত্রী সৈয়দ মহম্মদ আলতাফ বুখারি জানিয়েছিলেন, কাঠুয়া কাণ্ডে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে পড়ুয়ারা রাস্তায় নেমে যে প্রতিবাদ জানাচ্ছে তা বন্ধ না হলে কড়া পদক্ষেপ করবে সরকার। রবিবার, সেই পদক্ষেপের অঙ্গ হিসেবেই এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর এই নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী।
জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়ায় আট বছরের এক কিশোরীকে জোর করে এক সপ্তাহ ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে ক্ষোভে ফুটছে গোটা দেশ। অভিযুক্তদের মৃত্যুদন্ডের দাবিতে পথে নেমে লাগাতার বিক্ষোভ দেখাচ্ছে কাশ্মীরের পড়ুয়ারাও। ইতিমধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সেখানে আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন পড়ুয়া।
নৃশংস এই ঘটনার প্রতিবাদে সরকারকে চেপে ধরেছে বিরোধীরাও। ঘটনায় অভিযুক্তদের সমর্থনে জম্মু-কাশ্মীরের দুই বিজেপি মন্ত্রী পথে নামায় আরও চাপে পড়ে যায় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই দুই মন্ত্রীকে তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও চুপ করানো যায়নি বিরোধীদের। গোটা ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নীরব কেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে অবশেষে কাঠুয়া কাণ্ড নিয়ে মুখ খোলেন প্রধামন্ত্রী। দোষীরা ছাড় পাবে না বলে তিনি আশ্বাস দেন। সম্প্রতি কাশ্মীরের মাটিতে দাঁড়িয়ে ঘটনাটিকে সমাজের লজ্জা বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। নির্যাতিতার পরিবারকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেয়েছে সুপ্রিম কোর্টও। শুধু দেশে নয়, কাঠুয়া কাণ্ড ভারতের মুখ পুড়িয়েছে বিশ্বমঞ্চেও। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। ভারতে যা ঘটছে তা হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টিন ল্যঁগার্দ।
ঘটনার প্রেক্ষিতে শনিবারই পকসো আইন সংশোধনী অর্ডিন্যান্সে সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। রবিবার সেই অর্ডিন্যান্সে সাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি। এই অর্ডিন্যান্সের ফলে ১২ বছরের কম বয়সী কোনও শিশু-কিশোরীকে ধর্ষণ করলে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা হবে মৃত্যুদণ্ড।

Leave A Reply

Your email address will not be published.