বিশ্বের দরবারে সেরা ‘সবুজ সাথী’ই কি মমতার একুশে জয়ের চাবিকাঠি?

কন্যাশ্রীর মতোই বিশ্ব সেরা খেতাব অর্জন করেছিল সবুজ সাথী প্রকল্প

রাজ্যের উন্নয়ন, রাজ্যবাসীর উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে তুলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। ২০১১ থেকে ২০২১। গত এক দশকে একাধিক প্রকল্পের রূপায়ন এবং তার বাস্তব রূপ দিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে অন্যতম সবুজ সাথী। কন্যাশ্রীর মতোই বিশ্ব সেরা খেতাব অর্জন করেছিল সবুজ সাথী প্রকল্প।

আজ আলোচনা করা যাক, মমতা ব্যানার্জির এই অভিনব প্রকল্প নিয়ে।

২০১৫-২০১৬ সালের বাজেটে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র সবুজ সাথী প্রকল্পের ঘোষণা করেন। তার পরে ২০১৫ সালে সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে এই প্রকল্পের শুভ সূচনা করেন।

সবুজ সাথী প্রকল্প কী?

বাংলার মানুষের উন্নয়নে একের পর এক প্রকল্প চালু করা হয়েছে। সেই তালিকায় ২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আরেকটি প্রকল্প যোগ করা হয়, যার নাম সবুজ সাথী প্রকল্প। ভবিষ্যতে ছাত্র ছাত্রীরা যাতে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতা অর্জন করে সেই উদ্দেশ্যেই চালু হয় সবুজ সাথী প্রকল্প।

এই প্রকল্পে রাজ্যের সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল এবং মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ‘সবুজ সাথীর’ সাইকেল দেওয়া হয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে ৭০ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী উপকৃত হয়েছে।
সবুজ সাথীর অর্থ হল শিক্ষার্থীদের সঙ্গী। সবুজ অর্থে শিশুদের বা শিক্ষার্থীদের বোঝানো হয়েছে এবং সাথী কথার অর্থ সঙ্গী।

হিরো সাইকেলস (Hero Cycle), টিউব ইনভেস্টমেন্টস অব ইন্ডিয়া (Tube Investment Of India) এবং এভন সাইকেলস (Avon Cycle) এই তিনটি সাইকেল প্রস্তুতকারী সংস্থা রাজ্য সরকারের কাছে দরপত্র জমা দিয়েছিল। এবং এই তিনটি সংস্থার সাহায্যেই পাঁচ লক্ষ সাইকেল সরবরাহ হয়। এই প্রকল্পে যে শুধু শিক্ষার্থীরাই উপকৃত হয়েছে তা নয়। অনেক সাইকেল প্রস্তুতকারী সংস্থাও লাভবান হয়েছে।

কন্যাশ্রীর পর বিশ্বে সমাদৃত হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্প। গত বছর রাষ্ট্রসংঘ স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটির পক্ষ থেকে ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পকে সেরার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।

সুবিধা

  • এই প্রকল্পের অধীন পাঠরত পড়ুয়ারা রাজ্য সরকারের তরফে বিনামূল্যে সাইকেল পান। যার কারণে স্কুল যাতায়াতের খরচ সাশ্রয় হবে।
  • নবম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে।
  • এই প্রকল্পের আওতায় থাকা সকল ছাত্রছাত্রীর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হবে।
  • এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান চাহিদার পাশাপাশি রাজ্যের ছোট এবং বড় বিক্রেতাদেরও উপকার হবে।
  • ধর্ম, বর্ণ আর ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের এই প্রকল্পের অধীনে থাকার অধিকার রয়েছে। গ্রাম বাংলায় বাড়িতে একটা সাইকেল থাকার সুবিধা অনেক।

যোগ্যতা

  • এই প্রকল্পের আওতায় থাকতে হলে আপনাকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • প্রকল্পের সুবিধা কেবলমাত্র স্কুল পড়ুয়াদের জন্য।
  • নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পড়ুয়ারা এই প্রকল্পের অধীনে থাকতে পারবে।
  • এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীকে সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হতে হবে।

৮০০ প্রকল্পকে হেলায় হারিয়ে বিশ্বের দরবারে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছিল ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্প। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা জানাচ্ছেন, ২১ এর ভোট ময়দানে বিপুল সাফল্যের চাবিকাঠি ‘সবুজ সাথী’।

Comments are closed.