পর্যটন দফতরের উদ্যোগে পুজো পরিক্রমা, শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে সেরা পুজো দেখানোর ব্যবস্থা

করোনার জেরে বিপর্যস্ত বিশ্ব আস্তে আস্তে ফিরছে ছন্দে। ছন্দে ফিরছে বাংলাও। এসে গিয়েছে বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গা পুজো। আর এই পুজোকে কেন্দ্র করেই করোনার মধ্যেও সাধারণ মানুষের জন্য একগুচ্ছ বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য পর্যটন দফতর।

মার্চ মাসের শেষ বাংলা এবং এদেশে এসেছে করোনা। তারপর সময় যত গড়িয়েছে অতিমারির আকাল সারা পৃথিবীর মতো আমাদের দেশকেও আচ্ছন্ন করেছে। কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, মাস্ক, স্যানিটাইজার, ইত্যাদি কতগুলো শব্দ আমাদের খুব পরিচিত গণ্ডির মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠছে, মানুষও আবার পুরনো ছন্দে ফিরছেন। আর এরই মাঝে আকাশে-বাতাসে বইছে আশ্বিনের বাণী-উমার আগমনী বার্তা। আর বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের কয়েকদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দফতর প্রতি বছরের মতো এবছরও পুজো পরিক্রমায় সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি বাসে করে ঠাকুর দেখার উপর এক বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দফতরের অন্তর্গত ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের (wbtdcl) নিজস্ব ওয়েবসাইটে এই পুজো প্যাকেজের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য পর্যটন দফতর এই প্যাকেজকে তিনটে ভাগে ভাগ করেছে, ‘উদ্বোধনী শারদোৎসব’, ‘উত্তরা শারদোৎসব’ এবং ‘দক্ষিণী শারদোৎসব’। বস্তুত, এই বিশেষ বাস মূলত কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্রই বড়ো বড়ো পুজো মণ্ডপের মধ্যে দিয়ে যাবে। তবে অতিমারির কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বাসের সিট সংখ্যা এবছরের জন্য খুবই সীমিত রাখা হয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দপ্তরের ওয়েরবসাইটে জানানো হয়েছে।

সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, এবছর পুজো মণ্ডপ তৃতীয়া থেকে উন্মুক্ত করা হবে। ‘উদ্বোধনী শারদোৎসব’ এর সূচনা হবে ২০ অক্টোবর তথা চতুর্থীর দিন। সেদিন সকাল ৯ টার সময় ৩/২ পূর্ব বিবাদী বাগের ট্যুরিজম সেন্টার থেকে বাস ছাড়বে। এই বাস কলেজ স্কোয়ার, মহম্মদ আলি পার্ক, কাশিবোস লেন, বাগবাজার সার্বজনীন, বাদামতলা, ৬৬ পল্লী, মুদিয়ালি, শিবমন্দির, একডালিয়া এভারগ্রীন, সিংহী পার্ক, হিন্দুস্থান রোড, রাজডাঙ্গা নব-উদয়ন সংঘ হয়ে আবার বিবাদী বাগ ট্যুরিজম সেন্টারে ফিরে আসবে। পুরো যাত্রাপথটা সাড়ে ৬ ঘণ্টার। এর মধ্যে সকালের এবং দুপুরের খাবার পর্যটন দপ্তর থেকে দেওয়া হবে। পুরো প্যাকেজটিতে মাথাপিছু ২২০০ টাকা করে লাগবে বলে জানানো হয়েছে।

‘উদ্বোধনী শারদোৎসব’ এর বাস চতুর্থী এবং পঞ্চমীতে ১৫ জন সদস্যকে এবং ষষ্ঠীর দিন ১৩ জন সদস্যকে নিয়ে একই পথে চলবে বলে পর্যটন দপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে জানানো হয়েছে।

‘উত্তরা শারদোৎসব’ এবং ‘দক্ষিণী শারদোৎসব’ এর সূচনা হবে সপ্তমীর দিন থেকে। সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী এই তিন দিন দুটি ভিন্ন পথে একটি করে বাস চলবে বলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দফটরের। তবে এক্ষেত্রেও সদস্য সংখ্যা খুবই সীমিত। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে ৩/২ পূর্ব বিবাদী বাগ থেকে বাস ছাড়বে। ‘উত্তরা শারদোৎসব’ বাসের যাত্রাপথ হল মহম্মদ আলি পার্ক, কলেজ স্কোয়ার, বাগবাজার সার্বজনীন, কুমোরটুলি পার্ক, আহিরিটোলা, পাথুরিয়াঘাটা, রবীন্দ্র কানন, কাশিবোস লেন, তেলেঙ্গাবাগান, মানিকতলা, চালতা বাগান, রামমোহন স্মৃতি সংঘ হয়ে বিবাদী বাগ ট্যুরিজম সেন্টার। ‘উত্তরা শারদোৎসব’ এ সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত বাসের সিট সংখ্যা ১৫ জন রাখা হয়েছে। সকাল ও দুপুরের খাবার পর্যটন দপ্তর থেকে দেওয়া হবে।

‘দক্ষিণী শারদোৎসব’ এর বাসও সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত চলবে। এই বাসটিও ৩/২ পূর্ব বিবাদী বাগ থেকে সকাল ৯ টায় ছাড়বে। আদি বালিগঞ্জ সার্বজনীন, একডালিয়া এভারগ্রীন, সিংহী পার্ক, হিন্দুস্থান পার্ক, দেশপ্রিয় পার্ক, মুদিয়ালি ক্লাব, শিবমন্দির, বাদামতলা, ৬৬ পল্লী, চেতলা অগ্রণী ক্লাব হয়ে বিবাদী বাগ ট্যুরিজম সেন্টারে বাস এসে থামবে। ‘দক্ষিণী শারদোৎসব’ এর বাসে সপ্তমীর দিন সিট সংখ্যা ১১, অষ্টমী এবং নবমীতে সিট সংখ্যা ১৫ জন রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। যে সমস্ত আগ্রহী ব্যক্তি পুজোর দিনগুলিতে এই পরিষেবা নিতে ইচ্ছুক তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের ওয়েবসাইটে (www.wbtdcl.com) প্যাকেজ দেখে নিতে পারেন।

Comments are closed.