আন্দামানে নিহত মার্কিন মিশনারির মৃতদেহ উদ্ধার করা নিয়ে সংশয়, আটক ৭ মৎস্যজীবী

মার্কিন মিশনারি জন অ্যালেন চাউ-এর মৃতদেহের খোঁজ এখনও মেলেনি। আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ জানিয়েছেন, সময় লাগবে মৃতদেহ উদ্ধারে। এদিকে ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে জনের পরিবার জানিয়েছে, সেখানে তিনি পুরোপুরি নিজের ইচ্ছেতেই গিয়েছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, জন অ্যালেন চাউ ঈশ্বর, জীবন এবং দু:খী মানুষদের সাহায্য করতে ভালোবাসতেন।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান কনসার্ন নামে যে সংস্থার হয়ে জন কাজ করতেন তাঁর প্রেসিডেন্ট জেফ কিং বলেছেন, তাঁদের সামনে সত্যকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন জন। সেটা নিয়ে তিনি কথাও বলেছিলেন।
গত ১৬ নভেম্বর আন্দামানের সেন্টিনেল দ্বীপে উপজাতিদের ছোড়া তিরে নিহত হন ভ্যাঙ্কুভারের মিশনারি জন অ্যালেন চাউ। আন্দামানে ৭ মৎস্যজীবীকে ৩২৫ ডলার দিয়ে তিনি যান নিষিদ্ধ সেন্টিনেল দ্বীপে। ভারতের আইন অনুযায়ী লুপ্তপ্রায় সেন্টিনেলিদের ওই দ্বীপে যাওয়া নিষিদ্ধ। গত ১৫ নভেম্বর উপকূলরক্ষী বাহিনীর নজর এড়িয়ে তিনি সেখানে ঢুকে পড়েন। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে অপেক্ষা করতে বলে তিনি জঙ্গলে ঢুকে যান। সেই সময় একটি তির এসে লাগে তাঁর হাতে থাকা একটি বইয়ে। ওই তির হামলার পর নৌকায় ফিরে যান অ্যালেন। নিজের অভিজ্ঞতার কথা লেখেন। পরদিন ফের ফিরে যান জঙ্গলে। তারপরেই উপজাতিদের ছোড়া বিষ তিরে তিনি নিহত হন। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপুঞ্জের ডিজি দীপেন্দ্র পাঠক জানান, মৎস্যজীবীরা দেখেছেন জনের মৃতদেহ টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে মাটিতে পুঁতে দিচ্ছে উপজাতিরা। ওই ৭ মৎস্যজীবীকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সংরক্ষিত এলাকা উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপের বাসিন্দাদের ব্যাপারে জানার আগ্রহ গত শতকের ছয়ের দশক থেকে। গত ৬০ হাজার বছর ধরে সভ্য দুনিয়ার সমস্ত কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে তাঁরা নিজেদের মতো করে বেঁচে আছেন। এই দ্বীপের বাসিন্দারা এখনও আদিম মানবের সরাসরি বংশধর। এঁরা এসেছিলেন আফ্রিকা থেকে। ওঁদের ভাষাও আলাদা। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে মাত্র ৫০ কিমি দূরে ওই দ্বীপে খুব বেশি হলে ১৫০ জন বাস করেন বলে অনুমান। বিগত ৬০ হাজার বছর ধরে তাদের জীবনে লাগেনি আধুনিকতার কোনও ছোঁয়া। মাছ আর নারকোল খেয়েই তাঁরা দিব্যি বেঁচে আছেন।

Comments are closed.