ত্রিপুরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ সিপিএমের, প্রার্থীদের মনোনয়ন তুলে নিতে বাধ্য করছে শাসক দল

ত্রিপুরার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১২১ আসনে সিপিএম প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে।
আগামী ২৭ শে জুলাই রয়েছে ত্রিপুরার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। রাজ্যের ৬ হাজার ১১১ গ্রাম পঞ্চায়েত আসন, ৪১৯ পঞ্চায়েত সমিতি ও ১১৬ টি জেলা পরিষদ আসনে ভোট হবে। সিপিএমের অভিযোগ, কার্যত বিরোধী শূন্য করে ভোটে জয়লাভ করার জন্য প্রবল সন্ত্রাস চালাচ্ছে বিজেপি। প্রথমে বাম নেতা-প্রার্থীদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, খুন ও এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয় বিজেপি। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায়, সিপিএম প্রার্থীদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয় বলে ত্রিপুরার শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। সিপিএমের অভিযোগ, জেলা পরিষদের ২৫ টি, ৩২ পঞ্চায়েত সমিতি এবং ৬৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে ১২১ টি আসনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে তাদের প্রার্থীদের। সেই সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। অন্যান্য আসনেও প্রার্থী পদ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে শাসক দল।
বামেদের অভিযোগ, নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই প্রার্থী না হওয়ার জন্য তাঁদের নেতা ও কর্মীদের হুমকি দেওয়া শুরু করে বিজেপি। রাস্তা-ঘাটে বাম কর্মী সমর্থকদের শারীরিক হেনস্থা করা হচ্ছে, এমনকী মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে বিডিও অফিসের সামনেই তা কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সিপিএমের আরও অভিযোগ, বারবার এ নিয়ে তারা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হলেও কোনও লাভ হয়নি। বরং হুমকি, মারধর, হেনস্থা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এমনকী যে সমস্ত বিডিওর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনা হয়, তাঁরাও বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সিপিএমের অভিযোগ। এই হুমকি ও চাপ উপেক্ষা করে কয়েকজন সিপিএম প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সব ব্লকে রিটার্নিং অফিসারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয় সিপিএম প্রার্থীদের বৈধ মনোনয়ন বাতিল করে দেওয়ার জন্য। গত বৃহস্পতিবার ছিল নির্বাচন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন বিজেপির প্রবল হুমকি, চাপের মুখে প্রাণভয়ে ১২১ টি আসনে মনোনয়ন তুলে নেন সিপিএম প্রার্থীরা। বামেদের অভিযোগ, গণতান্ত্রিক ভোট প্রক্রিয়াকে প্রহসনে রূপান্তরিত করছে রাজ্যের শাসক দল। যদিও এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ত্রিপুরার রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

Comments are closed.