১০-৫ টার চাকরি করেও ঠেলা গাড়িতে বিরিয়ানি বিক্রি করছেন দুই ইঞ্জিনিয়ার, উদ্যোগের নাম ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ঠেলা’ 

খাদ্য প্রেমিক অথচ বিরিয়ানি ভালোবাসেন না এমন মানুষ পাওয়া শুধু মুশকিলই নয় কার্যত ‘না মুমকিন’। বড় রেস্তরাঁ থেকে শুরু করে মায় রাস্তার ধারে ঠেলা, বিরিয়ানির গন্ধ খাইয়েওয়ালাদের জন্য এক অন্যরকম আকর্ষণ। আর সেই ঠেলার নাম যদি হয় ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ঠেলা’, তাহলে তো বাড়তি কৌতূহল জাগাবে বৈকি। নামের মতোই আকর্ষণীয় ইঞ্জিনিয়ার্স ঠেলা গড়ে ওঠার নেপথ্যের কাহিনীও। 

ওড়িশার মালিকানগিরির টাউন কালেক্টর অফিসের সামনে গেলেই দেখা মিলবে ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ঠেলা’র। ঠেলার মালিক দুই বন্ধু সুমিত সামাল এবং প্রিয়ম বেবার্তা। পেশায় দু’জনেই ইঞ্জিনিয়ার। বর্তমানে তাঁরা একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত। করোনা লকডাউনই অনেকের মতো দুই বন্ধুর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। লকডাউনে বাড়ি থেকেই কাজ করতে হত। কাজের শেষে প্রায়ই দুই বন্ধু বিরিয়ানি খেতে যেতেন স্থানীয় স্ট্রিট ফুডের দোকানে। 

প্রিয়ম জানান, একদিন এরকমই রাস্তার ধারে এক দোকানে বিরিয়ানি খাচ্ছিলেন দুই বন্ধু। তাঁরা দেখেন দোকানটির পাশেই একটা ময়লা ফেলার জায়গা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের পাশাপাশি খাওয়ারের গুণমানও অত্যন্ত খারাপ। 

রাস্তার ধারে দোকান হলেও খাওয়ার কেন স্বাস্থ্যকর হবে না? দুই বন্ধুর মাথাতেই ভাবনা আসে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। খেতে ভালো এবং স্বাস্থ্যকর খাওয়ারের ভাবনা থেকেই দু’জনে সিদ্ধান্ত নেন বিরিয়ানির বিক্রির। 

প্রিয়ম জানান,পরিকল্পনা করলেও দুজনের কেউ রান্না জানতেন না। অথচ দুজনেই ঠিক করেছিলেন রাস্তার ধারে যে সমস্ত বিরিয়ানি পাওয়া যায় সেগুলির থেকে আলাদা হবে তাঁদের তৈরি বিরিয়ানি। সেই মতো প্রিয়ম মায়ের কাছেই রান্না শিখতে শুরু করেন। সঙ্গে দুই বন্ধু ইন্টারনেটের সাহায্যে বিরিয়ানি নিয়ে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করে। 

ইঞ্জিনিয়ার্স ঠেলার আরেক কর্তা সুমিত বলেন, আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল, বাড়ির তৈরী খাওয়ারের মতোই আমাদের বিরিয়ানি স্বাস্থ্যকর হতে হবে। সেই মতো বাজার করা থেকে শুরু করে রান্নার মেনু ঠিক করা পুরোটাই আমরা দু’জনে একসঙ্গে করি। দু’জন রান্নার লোক রেখেছি। আমাদের ঠিক করে দেওয়া মেনু অনুযায়ী ওঁরা রান্না করে। অফিসের কাজের শেষে আমরা দুই বন্ধু দোকানে চলে আসি।  

প্রাথমিক ভাবে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে দুই বন্ধু ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ঠেলা’ শুরু করেন। ২০২১ মার্চ মাস থেকে শুরু পথচলা। অন্যদের থেকে আলাদা হওয়ায় খুব দ্রুতই জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে যায় ইঞ্জিনিয়ার্স ঠেলা। সুমিত জানালেন, বর্তমানে রোজ প্রায় ১০০ প্লেট বিরিয়ানি বিক্রি হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে ‘ঠেলা’থেকে দুই বন্ধুর রোজগার মাসে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা।    

       

   

Comments are closed.