মেয়ের সামনেই বাবাকে পরপর গুলি, মৃত্যু সাংবাদিকের, যোগী রাজ্যে জঙ্গলরাজের অভিযোগ মমতার

মৃত্যু হল সাংবাদিক বিক্রম জোশীর। বুধবার সকালে গাজিয়াবাদের হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। সোমবার দুষ্কৃতীদের গুলিতে গুরুতর আহত অবস্থায় হিন্দি দৈনিকের সাংবাদিক বিক্রমকে গাজিয়াবাদের যশোদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ দুই মেয়েকে নিয়ে বাইকে বাড়ি ফিরছিলেন বিক্রম জোশী। পথে বাইক আটকে মারধর করা হয় হিন্দি দৈনিক জন সাগর টুডের সাংবাদিককে। তারপর বিক্রম জোশীর মেয়েদের সামনেই গুলি করা হয় তাঁকে। ঘটনাটি ঘটে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বিজয় নগর এলাকায়। সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে গোটা ঘটনা।

গোটা ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ করছে মৃত সাংবাদিকের পরিবার। তাঁদের দাবি, মূল অভিযুক্ত রবিকে গা ঢাকা দেওয়ার সুযোগ করে দিতেই পুলিশ তদন্তে ইচ্ছাকৃত ঢিলেমি করছে। তবে এই ঘটনা নিয়ে জাতীয় স্তরে তোলপাড় শুরু হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে যোগী রাজ্যের পুলিশ। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে বিজয় নগর থানার এসআইকে। সত্যিই পুলিশের তরফে গাফিলতি ছিল কিনা জানতে শুরু হয়েছে ডিএসপি পর্যায়ের তদন্ত।

কিন্তু আচমকা কেন এমন ঘটনা? পুলিশ সূত্রে খবর, বিগত কিছুদিন ধরেই বিক্রমের ভাইঝিকে বিরক্ত করছিল এলাকার ছোটু, রবি ও আকাশ বিহারি নামে ৩ ব্যক্তি। ১৬ জুলাই ওই ৩ জনের বিরুদ্ধে বিজয় নগর থানায় অভিযোগ করেন বিক্রম জোশী। তারপরই এই ঘটনা। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, প্রতিশোধ নিতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

এদিকে একের পর এক ঘটনায় যোগী রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তীব্র সমালোচনা চলছে যোগী সরকারের। উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ কায়েমের অভিযোগও উঠছে। এই পরিস্থিতিতে এবার সরাসরি উত্তরপ্রদেশের আইনশৃ্ঙখলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাংবাদিক মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ট্যুইটে তিনি লেখেন, সারা দেশে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে যেখানে সবার গলা টিপে ধরা হচ্ছে। এমনকী সংবাদমাধ্যমও ছাড় পাচ্ছে না। ভয়াবহ!

 

২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সমাবেশ থেকে মমতা ব্যানার্জি নিশানা করেছিলেন যোগী আদিত্যনাথ শাসিত উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতিকে। তারপর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হল এক সাংবাদিকের। কিছুদিন আগেই দুষ্কৃতী বিকাশ দুবের দলবলের গুলিবৃষ্টির মুখে অসহায় মৃত্যু বরণ করেছিলেন একাধিক পুলিশকর্মী। তারপর বিকাশকে গ্রেফতার করা হয় মধ্যপ্রদেশ থেকে। সেখান থেকে লখনউ ফেরার পথে নাটকীয় পরিস্থিতিতে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় পুলিশ খুনে অভিযুক্ত বিকাশ দুবের। তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে দেশে। সেই রেশ মিটতে না মিটতেই এবার দুষ্কৃতীদের নিশানায় সাংবাদিক। সবমিলিয়ে যোগী রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল।

Comments are closed.