এবিভিপির অভিযোগে অরুন্ধতী রায়ের বই সিলেবাস থেকে বাদ দিল তামিলনাড়ুর বিশ্ববিদ্যালয়

এবিভিপির বিক্ষোভের মুখে তামিলনাড়ুর ইউনিভার্সিটির পাঠ্যসূচি থেকে বাদ পড়ল অরুন্ধতী রায়ের বই। মাওবাদীদের উপর ‘ওয়াকিং উইথ দ্য কমরেডস’ নামে বইটি লিখেছিলেন অরুন্ধতী রায়। ২০১৭ সাল থেকে তা দক্ষিণের রাজ্যের তিরুনেলভেলির এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হয়। এবার গেরুয়া ছাত্র সংগঠনের আপত্তিতে বাদ পড়ল তা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২০১৭ সাল থেকে ইংরেজির স্নাতকোত্তর কোর্সে ওয়াকিং উইথ দ্য কমরেডস বইটি ছিল। কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে লক্ষ্য করি, শ্রীমতি রায় আসলে মাওবাদীদের মহান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। এই বিষয়ে গঠিত কমিটি বইটিকে বাদ দিয়ে এম কৃষ্ণনের ‘মাই নেটিভ ল্যান্ড: এসেজ অন নেচার’ বইটি অন্তর্ভুক্ত করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বই নিয়ে সর্বপ্রথম আপত্তি তোলে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। এনিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় তারা। তামিলনাড়ুতে এবিভিপির যুগ্ম সম্পাদক সি ভিগনেশ জানিয়েছেন, অরুন্ধতী রায় বইয়ে খোলাখুলি দেশদ্রোহী মাওবাদীদের সমর্থন করেছেন। শিক্ষকদের এই দেশ বিরোধী বই ছাত্রদের পড়াতে হয়েছে। যা মানুষের মধ্যে হিংসাত্মক ভাবনাকে প্রসারিত করেছে। তাই এই দেশ বিরোধী বইকে সিলেবাস থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছি, বলেন সি ভিগনেশ। আরএসএসের মুখপত্র অর্গানাইজারেও অরুন্ধতী রায়ের ওয়াকিং উইথ দ্য কমরেডসের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।
তবে অরুন্ধতী রায়ের লেখা সিলেবাস থেকে সরানোর ঘটনা অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগে কালিকট ইউনিভার্সিটির সিলেবাস থেকে বাদ যায় তাঁর একটি ভাষণ। এবার তামিলনাড়ুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোপ পড়ল ওয়াকিং উইথ দ্য কমরেডসের উপর।
এবিভিপির চাপের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন মাথা নত করলেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন তামিলনাড়ুর বিদ্বজ্জ্বনেরা। শনিবার এই ইস্যুতে প্রতিবাদ দিবস পালন করেন তাঁরা।
সিলেবাস থেকে নিজের লেখা বাদ পড়ায় অবাক হননি অরুন্ধতী রায়। এই ঘটনার পর বিবৃতি জারি করে তিনি জানান, কোনও বই ব্যান করলেই মানুষ আর পড়বেন না, এই ধারণা ভুল। এভাবে পড়া বন্ধ করা যায় না।

Comments are closed.