বিধানসভায় CAA বিরোধী প্রস্তাব: কী এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন? তা চালু হলে আপনার কী লাভ, কী ক্ষতি?

পাশ হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা CAB। আইনের পরিণত হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে শুরু হয়েছে দেশজুড়ে বিতর্ক, আন্দোলন। টানা প্রায় দেড় মাস ধরে আন্দোলন চলছে দেশে। ইতিমধ্যেই কেরল, পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ নতুন আইনের বিরোধিতা করে প্রস্তাব এনেছে বিধানসভায়। একই প্রস্তাব এনেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে তোলপাড় দেশ। সরকার পক্ষের দাবি, এই আইনের মাধ্যমে অনুপ্রবেশের সমস্যার সমাধান করা যাবে। আর বিরোধীরা বলছেন, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি করা হয় কী করে? কিন্তু কেন এই নয়া আইন  নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশে? কী আছে সেই বিলে?

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল (সিএবি) কী?

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ, যাঁরা ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে এদেশে শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন, তাঁদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

বিলে বলা হয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তি উপরোক্ত যে কোনও ধর্মাবলম্বী হন এবং এই ৩ দেশ থেকে এসে থাকেন, তাঁদের কাছে যদি পিতা-মাতার জন্ম শংসাপত্র নাও থাকে, তাহলেও তাঁরা ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। ভারতে কমপক্ষে ৫ বছর বসবাস করলেই তাঁরা সেই আবেদন করতে পারবেন।

বিলের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে যদি কোনও ব্যক্তি উপরোক্ত দেশগুলো ছাড়তে বাধ্য হন কিংবা পালিয়ে আসেন তাঁদের ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হবে।

এই বিলের মাধ্যমে অবৈধ বা বেআইনিভাবে যাঁরা এদেশে প্রবেশ করছেন, তাঁদের আটকাতেও এই বিল সহায়ক হবে।

সময়সীমা কী?

২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরকে ভিত্তিবর্ষ হিসেব ধরা হয়েছে। অর্থাৎ তার আগে কিংবা সেই সময় যাঁরা ভারতে প্রবেশ করেছেন। মূল আইনে ছিল, বর্তমানে যাঁরাই এদেশে জন্মেছেন কিংবা অন্তত ১১ বছর এদেশে থাকছেন, তাঁরাই নাগরিক হতে পারেন। কিন্তু সংশোধনীর মাধ্যমে তা এখন ৫ বছর। অর্থাৎ ২০১৯ এর ৩১ ডিসেম্বর অবধি থাকলেই তিনি ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে ব্যতিক্রম

বিলে দুটি ব্যতিক্রম রয়েছে। সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিল এলাকায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লাগু হবে না। অর্থাৎ অসমের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরাম। এছাড়া ইনার লাইন পারমিট রেজিমের অন্তর্গত রাজ্য যেমন অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ডে এই আইন লাগু হবে না। এই ব্যতিক্রমগুলো আগের আইনে ছিল না।

এখন প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্র এই আইন পাশ করলেও একের পর এক রাজ্য যেভাবে এর বিরোধিতা করছে এবং বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করছে, তা কি আদৌ সারা দেশে লাগু করা সম্ভব?

Comments are closed.