শ্রমিক-কর্মচারীর দৈনিক ১২ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ৭২ ঘণ্টা কাজের সময় বেঁধে দিল গুজরাত, রাজস্থান সহ দেশের ৬ রাজ্য
১৯২১ সাল। শ্রমিক সংগ্রামের নিরিখে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সময়। সেই বছরই ভারত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা ILO র ১৯১৯ সালের আওয়ার্স অফ ওয়ার্ক কনভেনশন গ্রহণ করে। দেশে সপ্তাহে ৬ দিন ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি পূরণ হয়। তারপর কেটে গিয়েছে পাক্কা ৯৯ বছর। করোনাভাইরাসের থাবায় টালমাটাল অর্থনীতির হাল ফেরাতে অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নিয়ে এই কনভেনশন ভাঙলো দেশের অন্তত ৬ টি রাজ্য।
দৈনিক ৮ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ৬ দিন মোট ৪৮ ঘণ্টা কাজ করাই ছিল এতদিন সরকারি নিয়ম। এবার কিছু রাজ্য তা বাড়িয়ে করে দিল সপ্তাহে ৭২ ঘণ্টা, অর্থাৎ দৈনিক ১২ ঘণ্টার শিফট।
ভারত লকডাউনের তৃতীয় পর্বে প্রবেশ করেছে। এই পর্বে থমকে যাওয়া অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বলা হয়েছে ৩৩% কর্মী দিয়ে কাজ চালাতে। যাতে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ে কোনওরকম না ব্যাঘাত ঘটে। এই সমস্যা সমাধানে রাজস্থান, গুজরাতের মতো অন্তত ৬ টি রাজ্যের সরকার কাজের সময় দিনে ৮ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করে দিয়েছে।
গত ১১ এপ্রিল নির্দেশিকা জারি করে রাজস্থানের কংগ্রেস সরকার। তাতে বলা হয় আগামী ৩ মাসের জন্য ৮ ঘণ্টা থেকে কাজের সময় বাড়িয়ে করা হল ১২ ঘণ্টা, সপ্তাহে ৬ দিন। বাঘেল সরকার বলছে, মাত্র ৩৩% কর্মী দিয়ে সময়ে কাজ ডেলিভার করতে গেলে এছাড়া উপায় নেই। রাজস্থান সরকারের বিজ্ঞপ্তি বলছে, অতিরিক্ত ৪ ঘণ্টা সময়কে ওভারটাইম হিসেবে ধরা হবে। রাজস্থানের পাশাপাশি গুজরাত, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশেও অনেকটা একই আইন পাশ করানো হয়েছে।
গুজরাত সরকার গত ১৭ এপ্রিল এ বিষয়ে গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে অতিরিক্ত কাজের সময়ের মজুরি নির্ধারিত হবে প্রাপ্ত মজুরির হারে। বলা হয়েছে, প্রত্যেক কর্মীকে ৬ ঘণ্টা পর বাধ্যতামূলক ব্রেক দিতে হবে।
কিন্তু আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কমভেনশন ভেঙে যেভাবে রাজ্যগুলো কাজের সময় বাড়িয়ে দেওয়ার একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই অসন্তোষ ব্যক্ত করেছে কর্মী ইউনিয়নগুলো।