অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি ৮০০, রাজ্যসভায় জানালেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে না পারায় বর্তমানে ৮০২ জন ব্যক্তি বন্দি রয়েছেন অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পে। জানাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
বুধবার রাজ্যসভায় সমাজবাদী পার্টির সাংসদ সুখরাম সিং যাদব জানতে চান নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে না পারায় কতজন মানুষ অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পে রয়েছেন? জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানান,  ২০২০ সালের ৬ মার্চের হিসেব অনুযায়ী অসমের বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে রয়েছেন ৮০২ জন।
উল্লেখ্য, গত বছর ৩১ অগাস্ট অসমে এনআরসি-র পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশিত হয়। দেখা যায়, সেই তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছে প্রায় ১৯ লক্ষ অসমবাসীর। যাঁদের অধিকাংশই হিন্দু। এত মানুষের নাম বাদ পড়ায় বিষয়টি নিয়ে সরব হন বিরোধীরা। এনআরসি প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ বলে তা বাতিলের দাবি ওঠে। চাপে পড়ে যায় কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্র এবং অসম সরকার জানায়, অসমের এনআরসি প্রক্রিয়ায় কোনও ত্রুটি থাকলে তা বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে গোটা দেশের সঙ্গে ফের এনআরসি হবে সেখানে।
এতে দেশজুড়ে শুরু হয় আরও প্রবল বিক্ষোভ। তা ধামা চাপা দিতে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, দেশে কোনও ডিটেনশন সেন্টারই নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, গোটা দেশে এনআরসি করার সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।
তারই মাঝে এল এই তথ্য। প্রধানমন্ত্রীর দাবিকে নাকচ করে কেন্দ্রের মন্ত্রকই জানিয়ে দিল, অসমে ডিটেনশন ক্যাম্প আছে এবং সেখানে ৮০২ জন মানুষ রয়েছেন।
অসমে এনআরসি তালিকায় বাদ পড়া মানুষের অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে ১৯৭১ সালের নথি চাওয়া হয়েছিল। রক্তের সম্পর্ক প্রমাণের পাশাপাশি নিজেদের নাগরিকত্বের প্রমাণও দেখতে চায় সরকার। কিন্তু এত পুরনো নথি স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের পক্ষে দেখানো সম্ভব হয়নি। বিশেষত, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁরা অবৈধভাবে প্রাণ ভয়ে এ দেশে পালিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের কাছে ‘৭১ সাল বা তার আগের কোনও কাগজই ছিল না। ফলে খাঁড়া নেমেছে তাঁদের উপরই বেশি।

Comments are closed.