বিএসএনএল ও এমটিএনএলের প্রায় ৯২ হাজার কর্মীর স্বেচ্ছাবসর, সরকারের বাঁচবে প্রায় ৯ হাজার কোটি

কেন্দ্রের লক্ষ্য ছিল কর্মী সংখ্যা কমিয়ে লোকসানে চলা বিএসএনএল ও এমটিএনএলকে ঘুরে দাঁড় করানো। তার জন্য আনা হয় স্বেচ্ছাবসর বা ভিআরএস প্ল্যান। দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ৯২, ৭০০ কর্মী ভিআরএসের জন্য আবেদন করায় প্রত্যাশার চেয়েও বেশি লক্ষ্য পূরণ করে ফেলেছে কেন্দ্র। এতে ঋণজর্জরিত দুই টেলিকম সংস্থার বছরে ৮,৮০০ কোটি টাকা বাঁচবে বলে জানাচ্ছেন শীর্ষ আধিকারিকরা।
মঙ্গলবারই ছিল ভিআরএস স্কিমে আবেদনের জন্য শেষ দিন। দুই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা সূত্রে খবর, তারা যতটা প্রত্যাশা করেছিল তার চেয়ে অনেক বেশি কর্মী স্বেচ্ছাবসরের জন্য আবেদন করেছেন।
বিএসএনএলের দেড় লক্ষ কর্মীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি, ৭৮ হাজার ৩০০ জন স্বেচ্ছাবসরের জন্য আবেদন করেছেন। অন্যদিকে, এমটিএনএলের ৭৬ শতাংশ বা ১৪ হাজার ৩৭৮ জন কর্মচারী ভিআরএসের আবেদন করেছেন। পঞ্চাশোর্ধ্ব কর্মীদের স্বেচ্ছাবসরের আবেদনের পাশাপাশি বিএসএনএলের ৬ হাজার কর্মী অবসর গ্রহণ করেছেন। যা তাঁদের টার্গেট পূরণ করেছে বলে জানান বিএসএনএলের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি কে পুরওয়ার।
বিএসএনএলের অর্ধেকের বেশি কর্মী কমে যাওয়ায় বেতন বাবদ ব্যয় ১৪ হাজার কোটি টাকা থেকে কমে ৭ হাজার কোটি টাকা হয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে এমটিএনএল চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল কুমার জানান, তাঁদের লক্ষ্য ছিল ১৩ হাজার ৬৫০ জন। সে জায়গায় ১৪ হাজার ৩৭৮ কর্মী ভিআরএসের আবেদন করেছেন। বর্তমান এমটিএনএলের কর্মী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৩০। কর্মীদের বেতন দিতে আগে বছরে ব্যয় হত ২,২৭২ কোটি টাকা, এখন তা দাঁড়াবে ৫০০ কোটি টাকায়।
প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা দেনা মাথায় থাকা দুই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা থেকে বয়স্কদের ছেঁটে ফেলতে চায় কেন্দ্র। এই লক্ষ্যে ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী কর্মীদের জন্য আনা হয় ভিআরএস প্ল্যান। ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করার দিন ধার্য হয়। গত মাসে কর্মীদের উদ্দেশে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভিআরএস প্ল্যানে এককালীন (এক্স-গ্রাসিয়া) যে অর্থ দেওয়া হবে, তা কর্মীর অবশিষ্ট চাকরিজীবনের মূল বেতন ও মহার্ঘ ভাতার থেকে বেশি হবে না। এক্স-গ্রাসিয়া হিসাবে কর্মীরা পাবেন প্রতি বছর ৩৫ দিন হিসাবে যত বছর চাকরি করেছেন তার মাইনে এবং প্রতিবছর ২৫ দিন অবশিষ্ট হিসাবে চাকরি জীবনের মাইনে। প্রথমে কেন্দ্রের এই প্ল্যান উপযুক্ত নয় বলে বেঁকে বসে কর্মী সংগঠনের বড় অংশ। কিন্তু শেষে দেখা গেল কেন্দ্রের লক্ষ্যের চেয়েও বেশি সংখ্যক কর্মী স্বেচ্ছাবসরের জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন।

Comments are closed.