দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে প্রত্যেক মানুষকে মাসে ১ হাজার টাকা করে দিক কেন্দ্র, দাওয়াই নোবেলজয়ী দম্পতির

ভারতে যত দ্রুত সম্ভব ইউনিভার্সাল আল্ট্রা বেসিক ইনকামের (UBI) মাধ্যমে প্রত্যেককে মাসে এক হাজার টাকা করে দেওয়ার ব্যবস্থা হোক। অবিলম্বে চালু হোক এক দেশ, এক রেশন কার্ড ব্যবস্থা। করোনা পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের উদ্দেশে এমনই পরামর্শ দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীবিদ দম্পতি অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি ও এস্থার ডুফলো।
গত রবিবার জয়পুর সাহিত্য উৎসবের একটি অনলাইন অনুষ্ঠানে ভারতের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন অর্থনীতিবিদ দম্পতি। সেখানে অভিজিৎ বলেন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি হওয়ার পর ভারতেও এর ব্যাপক উৎপাদন মানুষের সহায়ক হতে পারে। কিন্তু যতদিন না তা আবিষ্কার হচ্ছে ভারতকে আরও একদফা লকডাউন করতে হতে পারে। অন্তত সংক্রমণ মাত্রা যেদিকে যাচ্ছে তাতে সেটাই মনে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন উৎপাদক হিসাবে ভারতের শক্তির আরও উন্নতি করা যেতে পারে। তবে এর বিতরণ, তহবিল এবং ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটসের জন্য অন্যান্য দেশগুলির সাথে কাজ করতেই হবে। এরপরেই নোবেলজয়ী অর্থনীবিদ করোনা পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ মানুষকে যে সম্ভাব্য অসুবিধার মুখোমুখি হতে হবে তার দিকে নজর ঘোরান।
তিনি বলেন, ভারতকে একটি বিশাল চাহিদার অভাবের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তাই মানুষের হাতে নগদ অর্থ তুলে দিয়ে অর্থনীতিকে সচল রাখা যেতে পারে। এই প্রেক্ষিতে অভিজিৎ বলেন, প্রত্যেক মাসে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা করে বরাদ্দ হলেও বিশাল পার্থক্য তৈরি হবে। এমনকী একটি পাঁচজনের পরিবারে যদি প্রত্যেক সদস্যকে ৫০০ টাকা করেও দেওয়া হয়, তাতেও চাহিদা বাড়বে। এই টাকায় পরিবারটি অপরিহার্য পণ্যগুলি কিনতে পারবে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের এক দেশ, এক রেশন কার্ড ব্যবস্থার প্রশংসা করে বলেন, অতি সত্বর এটা কার্যকর করা দরকার।
এরই জের টেনে এস্থার ডুফলোর পরামর্শ, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব UBI বা ইউনিভার্সাল আল্ট্রা বেসিক ইনকাম ব্যবস্থা চালু করতে পারে ভারত। যেহেতু এটা কেন্দ্রের জন-ধন-আধার-মোবাইল বা JAM প্রকল্পের সঙ্গে অনেকটাই মেলে। ডুফলো বলেন, কোভিড পরিস্থিতি দেশের মানুষকে দারিদ্রের কিনারায় ঠেলে দিতে পারে। সেখান থেকে তাদের রক্ষা করতে পারে ইউবিআই। এর সাহায্যে সরকার কেবল দরিদ্রের সেবা করতে পারবে তাই নয়, প্রয়োজনে ইউবিআই-কে সামাজিক নিরাপত্তার একটি বিকল্প হিসেবে হাতে রাখতে পারবে। যা এই সংকট পরিস্থিতির পরেও কাজে লাগতে পারে। অভিজিৎ এই মত সমর্থন করে বলেন, আমরা মানুষকে যেন আশ্বস্ত করতে পারি এই বলে যে, পরের লকডাউন আরও ভালোভাবে হবে এবং তাতে মুক্তির উপায়ও বেরিয়ে আসবে।


এর আগেও অভিজিৎ ও এস্থার পরামর্শ দিয়েছেন, করোনায় লকডাউনবন্দি দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রয়োজনে টাকা ছাপিয়ে গরিবের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হোক।

Comments are closed.