অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি: ভারতের আরও মজবুত বিরোধী দরকার, যা শাসক দলের কার্যকলাপকে মাত্রাছাড়া হতে দেবে না

ভারতের আরও মজবুত বিরোধী দরকার। এটাই গণতন্ত্রের হৃদয়। জয়পুর সাহিত্য সম্মেলনে মন্তব্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জির। পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন,  মজবুত বিরোধী শক্তি শাসক দলের কর্মকাণ্ডকেও মাত্রাছাড়া পর্যায়ে পৌঁছতে দেয় না।

সম্প্রতি দেশজুড়ে চলছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি ও এনপিআরের বিরুদ্ধে আন্দোলন। দিল্লি থেকে শুরু করে কলকাতা, মুম্বই কিংবা গুয়াহাটি, ম্যাঙ্গালুরু। গণআন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়ছে রাজপথে। মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি আন্দোলনের একেবারে প্রথম সারির দখল নিয়েছেন মহিলা ও পড়ুয়ারা। এবার সরাসরি প্রসঙ্গের উল্লেখ না করলেও সদ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের মন্তব্যের লক্ষ্য বুঝতে অসুবিধা হয় না।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক দল থাকলে গণআন্দোলন অন্য মাত্রা পেত বলে মনে করছেন প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী। জয়পুর লিটারেচার ফেস্টিভ্যালের মঞ্চ থেকে তাই তাঁর এই মন্তব্যের ভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, কর্তৃত্ববাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সাফল্যের কোনও আন্তঃসম্পর্ক নেই। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তৃতায় উঠে আসে সিঙ্গাপুর, জিম্বাবোয়ের মতো দেশের কথা।

মঞ্চ থেকেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, যদি ভারতেই থাকতেন তাহলেও কি নোবেল পেতে পারতেন অভিজিৎ? এই প্রশ্নের জবাবে অবশ্য সাউথ পয়েন্ট স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বলেন, মনে হয় না। তারপরই তিনি বলেন, আমি বলছি না এদেশে প্রতিভার ঘাটতি আছে। কিন্তু এমআইটির মতো জায়গাগুলো বিশ্বের সেরা সম্ভাবনার আঁতুড় ঘর। দুনিয়ার সেরা পিএইচডি পড়ুয়ারা ওখানে ভিড় করে। এটা আমাকে খুব সাহায্য করেছে। বলেন জেএনইউ প্রাক্তনী। পাশাপাশি তিনি জানান, আমি যে কাজের সুনাম নিচ্ছি তা আসলে বেশিরভাগই অন্যদের করা কাজ। আসল ব্যাপার হল বড় মাপের কোনও কাজ একা করতে পারবেন না। সেরা মানের অনেকে মিলেই বড় কাজ করতে হবে। যেটা এখানে হওয়া কঠিন।

এর আগেও একাধিকবার সিএএ-এনআরসি-এনপিআরের পাশাপাশি মোদী সরকারের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কড়া সমালোচনা করেছিলেন অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি। এবার নাম না করে বিঁধলেন ছত্রভঙ্গ বিরোধীদের।

Comments are closed.