ধাক্কা আদানি গোষ্ঠীর: মুম্বই বিমানবন্দরের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঢুকতে পারল না গৌতম আদানির সংস্থা

মুম্বই বিমানবন্দরের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের ভার থাকছে জিভিকে গোষ্ঠীর হাতেই। ইংরেজি সংবাদপত্র দ্য ইকনমিক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা তুলেছে জিভিকে। যার জেরে ঋণ শোধের পাশাপাশি মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরও ২৩.৫ শতাংশ অংশীদারিও কিনে নিতে চলেছে সংস্থা। সংশ্লিষ্ট সংস্থায় শেয়ার কেনার মাধ্যমে মুম্বই বিমানবন্দর পরিচালনায় ঢুকতে চেয়েছিল আদানি গ্রুপ। কিন্তু জিভিকে গোষ্ঠীর এই পদক্ষেপে মুম্বই বিমানবন্দরের পরিচালনায় ঢুকতে পারল না আদানি গোষ্ঠী।
মুম্বই এয়ারপোর্টের পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে ২৩.৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিডভেস্ট এবং এসিএসএ নামে দুটি সংস্থার হাতে। সম্প্রতি তারা এই ব্যবসা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মর্মে নিজেদের শেয়ার হস্তান্তরের জন্য আবেদন করে। অংশীদারি কিনতে চেয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে আদানি গোষ্ঠী। সূত্রের খবর, সেই আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত ৭৬০০ কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে দুই সংস্থার মিলিত শেয়ার কেনার পথে আরও এগিয়ে যায় জিভিকে। মুম্বই বিমানবন্দরের পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০.৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে জিভিকে গোষ্ঠীর হাতে। বাকি শেয়ার এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার হাতে। এবার বিডভেস্টের ১৩.৫ শতাংশ এবং এসিএসএ-র ১০ শতাংশ জিভিকের দখলে এলে, বিমানবন্দর পরিচালনার ক্ষেত্রে সংস্থার শেয়ার গিয়ে পৌঁছবে ৭৪ শতাংশে।
গত বছরই বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা ব্যবসায় প্রবেশ আদানি গোষ্ঠীর। দেশের ৬ টি বিমানবন্দরের পরিচালনার বরাত ইতিমধ্যেই পেয়েছে তারা। তবে দেশের ৬ টি বিমানবন্দর পরিচালনার ভার আদানিদের হাতে যাওয়া নিয়ে বিতর্কও হয়। কেরলের বামপন্থী মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। কেরল সরকার আদালতেরও দ্বারস্থ হয়। এরমধ্যেই মুম্বই বিমানবন্দর পরিচালনাতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছিল গৌতম আদানির সংস্থা।
এ বছরের শুরুতেই বিডভেস্ট মুম্বই বিমানবন্দর পরিচালনার ক্ষেত্রে নিজেদের অংশীদারি ছাড়তে চেয়ে জিভিকে গোষ্ঠীকে প্রস্তাব দিয়েছিল। জিভিকে বিডভেস্টের অংশীদারি কেনার ব্যাপারে সম্মতিও জানায়। কিন্তু পরবর্তীতে লেনদেন সংক্রান্ত সমস্যার অভিযোগে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিডভেস্ট। আদালত বিডভেস্টকে আরবিট্রেশন ট্রাইব্যনালে যাওয়ার অনুমতি দেয়। সেই ট্রাইব্যুনালই জিভিকে গোষ্ঠীকে অক্টোবরের শেষ দিনের মধ্যে পাওনা মেটানোর নির্দেশ দেয়।
সম্প্রতি সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এর জেরে মুম্বই বিমানবন্দর এবং নির্মীয়মান নভি মুম্বই বিমানবন্দরের পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণে আরও বেশি অংশীদারিত্ব পেল জিভিকে। একইসঙ্গে আপাতত মুম্বই বিমানবন্দর পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণে আদানি গোষ্ঠীর প্রবেশের সম্ভাবনাও কার্যত শেষ হয়ে গেল বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

Comments are closed.