প্রান্তিক মানুষকে হত্যা চলছেই! এবার ঝাড়খণ্ডে ডাইন সন্দেহে পিটিয়ে খুন ৪ আদিবাসীকে

মুসলিম, আদিবাসী, দলিতদের পিটিয়ে খুন করাই কি আজ এ দেশে রেওয়াজে পরিণত হচ্ছে?
এবার ডাইন সন্দেহে ঝাড়খণ্ডে পিটিয়ে খুন করা হল চার আদিবাসীকে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের গুমলা জেলার সিসাই থানা এলাকার পিচকারি গ্রামে। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার ভোরে ষাটোর্ধ দুই পুরুষ ও দুই মহিলাকে পিটিয়ে খুন করা হয়। রবিবার রাত পর্যন্ত এই নৃশংস, বর্বর ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। নিহতদের নাম চম্পা ভগত (৬২), পিরি দেবী (৬০), সুনা ওঁরাও (৬২) এবং ফাগনি দেবী (৬০)। চম্পা ভগত এবং পিরি দেবী স্বামী-স্ত্রী। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে নিহতরা ডাইন চর্চার জড়িত ছিলেন। বাঁশ, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তারপর গলা কেটে এই চারজনকে হত্যা করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় এলাকায় আদিবাসীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার ভোরে মুখোশ পরা ১০-১২ জন লোক পিরি দেবীর বাড়িতে হানা দেয়। তাঁকে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে বলে। পিরি দেবী ঘর থেকে বেরোলে তাঁকে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে মারধর শুরু হয়। তাঁর স্বামী চম্পা ভগত বেরোলে তাঁকে নৃশংসভাবে মারধর শুরু হয়। একইভাবে পাশের দুটি বাড়ি থেকে টেনে বের করা হয় সুনা ওঁরাও এবং ফাগনি দেবীকে। চারজনকে প্রথমে লাঠি, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারা হয়, তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয় চারজনকে। বেলা বাড়লে পুলিশ পৌঁছায় ঘটনাস্থলে। কিন্তু আতঙ্কে গ্রামের লোকজন বিশেষ মুখ খোলেননি বলে জানা গিয়েছে। রবিবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতারও হয়নি।
গত সপ্তাহেই জমি দখলকে কেন্দ্র করে উত্তর প্রদেশের সোনভদ্রে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১০ আদিবাসীকে হত্যা করে গ্রাম প্রধানের বন্দুক বাহিনী। সেই ঘটনায় প্রধান সহ ২০ জনের বেশি লোক গ্রেফতার হলেও, উভা গ্রামের আদিবাসীদের মধ্যে এখনও আতঙ্ক রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোনও না কোন অংশে খুন বা আক্রান্ত হচ্ছেন প্রান্তিক মানুষ। দু’দিন আগেও গরু চোর সন্দেহে বিহারে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে তিনজনকে। এবার ডাইন চর্চায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঝাড়খণ্ডে খুন করা হল চারজনকে।

Comments are closed.